প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও অ্যালকেমিস্ট স্যার আইজ্যাক নিউটন (১৬৪৩-১৭২৭) প্রায় ৩৫০ বছর আগে বস্তুর গতিসম্পর্কিত দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। সেই থেকে প্রশ্ন দুটি বিজ্ঞানীদের ধাঁধায় রেখেছিল। কিন্তু এবার সেই জটিল ধাঁধার ঘোর কাটল! আর এ কাজটি করল মাত্র ১৬ বছর বয়সী ভারতীয় কিশোর শৌর্য রায়। বাবার চাকরি সূত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে জার্মানিতে বাস করছে তারা।
বিশ্ববাসীর কাছে নিউটনের করা প্রশ্ন দুটি প্রায় ৩৫০ বছর ধরে দুর্বোধ্যই ছিল। নিউটনের প্রশ্ন ছিল পৃথিবীর ওপর থেকে কোনো ঢিল যদি সামনের দিকে পৃথিবীর সঙ্গে সমান্তরালে ছোড়া হয়, কিছুক্ষণ পর ঢিলটি অভিকর্ষের টানে মাটিতে নেমে আসে। তবে ঢিলটির ওপর যে শক্তি (বল) প্রয়োগ করা হয়েছে তার ওপরে অভিকর্ষের টান, দুটি মিলিয়ে একটি মিশ্র বল (লব্ধি) তৈরি হয়। যার প্রভাবে কিছুটা বাঁকা পথে মাটিতে এসে পড়ে বস্তুটি। আগের থেকে আরো জোরে ঢিল ছুড়লে সে আগের থেকে আরো দূরে গিয়ে মাটিতে পড়ে। কিন্তু ঠিক কোন গতিতে ওই ঢিলটা ছোঁড়া হলে সে পৃথিবীতে গোলভাবে পাক খেয়ে একদম ঠিক সেই জায়গায় এসেই মাটিতে পড়বে, ঠিক যেখান থেকে তাকে ছোঁড়া হয়েছিল এবং মাটিতে ধাক্কা খেয়েই বা সে কোন দিকে লাফাবে?
এ প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে অনেক ঘাম ঝরিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সঠিক সমাধান বের করতে পারেননি। কয়েক বছর আগে উন্নত কম্পিউটারের সাহায্যে এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেলেও সেটিও ছিল বেশ জটিল আর গোলমেলে। কিন্তু এবার খুব সহজে নিজের হাতে অঙ্ক কষে নিউটনের প্রশ্নের উত্তর বের করে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছে স্কুলছাত্র শৌর্য। শুধু তাই নয়, তার কষা অঙ্কের পদ্ধতিতে কোনো বল ছুড়লে সহজেই হিসাব করা যাবে বলটির গতিপথও।
জার্মানির ড্রেসডেন শহরে বাস করে শৌর্য। পড়ছে ড্রেসডেনের একটি স্কুলে। চার বছর আগে পরিবারের সঙ্গে কলকাতা থেকে জার্মানিতে গিয়েছে সে। শৌর্য গণমাধ্যমকে বলেছে, জার্মান ভাষা জানা না থাকায় প্রথমে তার বেশ অসুবিধে হয়েছে। তবে এখন সে অনায়াসে জার্মান ভাষা বলতে পারে। এক দিন স্কুল থেকে ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শৌর্যদের। সেখানে নিউটনের বিষয়ে বলতে গিয়ে এক অধ্যাপক নাকি শৌর্যদের কাছে দাবি করেন, কোনো মানুষের পক্ষে নিউটনের ওই দুটি প্রশ্নের উত্তর বের করা সম্ভব নয়। কিন্তু অধ্যাপকের এ দাবি মেনে নিতে পারেনি শৌর্য। তাই সেই প্রশ্ন দুটির উত্তর বের করতে অঙ্ক কষতে লেগে যায়।
শৌর্য গণমাধ্যমকে বলেছে, ‘আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, কেন কেউ নিউটনের সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না? সব কিছুরই তো উত্তর খুঁজে পাওয়া সম্ভব।'
শৌর্যের এ সাফল্যের খবরে বিশ্বের গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের অঙ্গনে বেশ হৈচৈ শুরু হয়েছে। তবে নিজেকে এতটা কৃতিত্ব দিতে নারাজ শৌর্য। তার মতে, সে প্রতিভাবান নয়। বরং স্কুলে যদি সে আরো একটু ভালো করে ফুটবল খেলতে পারত, তা হলে অনেক বেশি খুশি হতো। শৌর্যের মেধাগুণে মুগ্ধ হয়ে স্কুলের শিক্ষকরা তাকে সমবয়সীদের চেয়ে দুই ক্লাস ওপরে ভর্তি করিয়েছেন। শিগগিরই পরীক্ষা শেষে কলেজে ভর্তি হবে শৌর্য। ্য
ইন্টারনেট
No comments:
Post a Comment