কাঠ দিয়ে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন শোপিস। দেশ-বিদেশে এসব শোপিসের রয়েছে দারুণ চাহিদা। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শেখ ফায়সাল ও সানজিদ আসাদ
কাঠের শোপিস বানাতে হাতে যশ থাকা চাই। অভিজ্ঞ কারো সঙ্গে কাজ করেও শিখতে পারেন। সম্ভব না হলে কারিগর রেখেও শোপিস তৈরি করতে পারেন। নাটোরের সিংড়ার ফরিদুল ইসলামের তৈরি কাঠের হস্তশিল্প দেশের চাহিদা মিটিয়ে ছয়টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। প্রথমে অন্যের প্রতিষ্ঠানে কাজ করলেও এখন তাঁর প্রতিষ্ঠানেই কাজ করছেন পাঁচ-ছয়জন কর্মচারী। ফরিদুল জানান, কাঠ দিয়ে তিনি তৈরি করেন তাজমহল, টেবিল ল্যাম্প, ফুলদানি, কলমদানি, নৌকা, মাছ, পাখি, হাতি, জুয়েলারি বক্স, টেবিলঘড়ি, দেয়ালঘড়ি, গাড়ি, পাউডার কেস, মোমদানিসহ হরেক রকম শোপিস। খুব বেশি বিনিয়োগের দরকার হয় না। অব্যবহৃত একটি ঘর কারখানা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
উপকরণ
ঢাকার মানিকনগরের শোপিস কারিগর আবদুল্লাহ মমিন জানান, কাঠ, ফেলনা কাঠের টুকরা এবং গুল্ম দিয়ে তৈরি করা যায় বিভিন্ন ধরনের শোপিস। নিখুঁতভাবে কাঠ খোদাই করে তৈরি করা হয় এসব বাহারি পণ্য। তাতে প্রয়োজন অনুসারে রং করা হয়। শোপিস আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বার্নিশ করা হয়। বার্নিশে অনেকে এক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করেন। জোড়া দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেন ভালো মানের আইকা।
সতর্কতা
আবদুল্লাহ মমিন জানান, শোপিস যত নিখুঁত হবে, দামও হবে তত বেশি। তাই তৈরির সময় সতর্ক থাকতে হয়। বিশেষ করে কাঠ খোদাই করার সময়। এ ছাড়া একটু অসাবধানতায় ভেঙে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে পণ্যটি।
শোপিসের বাজার
আবদুল্লাহ মমিন জানান, ঢাকার বিভিন্ন সুপার মল, উপহার সামগ্রীর দোকান, হস্তশিল্পের দোকানসহ বিভিন্ন জায়গায় পাইকারি দামে বিক্রি করা হয় শোপিস। এ ছাড়া কারখানা থেকেই হকাররা পাইকারি দামে কিনে নিয়ে শহর ও গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে এসব পণ্য বিক্রি করেন।
বিদেশেও এসব শোপিসের দারুণ চাহিদা আছে। ফরিদুল জানান, তাঁর তৈরি শোপিস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইতালি, জার্মানি, আরব আমিরাত, মরিশাস, দুবাই, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে।
ঢাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের বিসমিল্লাহ কটেজের কর্ণধার হেলাল খান জানান, চাহিদা অনুযায়ী শোপিসের সরবরাহ কম। সব ধরনের ক্রেতাই ঘর সাজাতে বা উপহার দিতে কাঠের শোপিস কিনে নিয়ে যান। তবে ছাত্রছাত্রী ও গৃহিণীরা এসব পণ্য বেশি কিনে থাকেন।
আয়ের হিসাব
ফরিদুল ইসলাম জানান, কারিগরদের দৈনিক হিসাবে মজুরি দিতে হয়। প্রতি পিস পণ্য বিক্রি হয় প্রকারভেদে ২০ থেকে ৫০০ টাকায়। আবদুল্লাহ মমিন শুরু করেছিলেন মাত্র ২৫ হাজার টাকায়। এই টাকা দিয়ে তিনি কিছু পরিত্যক্ত কাঠ, শোপিস তৈরির প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বার্নিশ ও কেমিক্যাল কিনেছিলেন। শুরুতে মাসে আয় হতো ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন ব্যবসা বড় হয়েছে, লোকবলও অনেক। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ১২ জন কর্মচারী। সব খরচ বাদে মাসে আয় থাকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
Source: www.kalerkantho.com
কেশবপুরের আলতাপোল গ্রাম
কাঠের শোপিস তৈরি করে শাহানা এখন স্বাবলম্বী
কেশবপুরের আলতাপোল গ্রাম। থানা শহর থেকে স্বল্প দূরত্বের এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় বর্ষা মওসুমে মাঠঘাট পানিতে ডুবে থাকে দীর্ঘ সময়। ফসলও ঠিকমতো হয় না। কাজের অভাবে অলস সময় পার করতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের। তবে অলস বসে থাকলে তো আর সংসারে গতি আসে না। জীবন-জীবিকার তাগিদে ভিন্ন পেশার সাথে জড়িয়ে পড়েন তারা। আর ভিন্ন পেশা হিসেবে কাঠের শোপিস তৈরি করে তা বাজারজাত শুরু করেন। গাছের চিকন ও অল্প মোটা ডাল ও বডি শুকিয়ে তা মেশিনে প্রক্রিয়া করে দৃষ্টিনন্দন শোপিস তৈরি করে থাকেন তারা।
এই গ্রামের এমনই এক গৃহবধূ শাহানা বেগম, যিনি সংসারের অভাব দূর করতে প্রায় ১৫ বছর ধরে কাঠের শোপিস তৈরি করে চলেছেন। স্বামী, এক ছেলে আর দুই মেয়ের সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। আখের চাষ, মাছের ঘের আর গরু পালনের পাশাপাশি সেলাই মেশিনও চালান তিনি। স্বামী আবদুল মালেক ফার্নিচারের রঙমিস্ত্রির কাজ করেন। ফলে আগের মতো এখন অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না তাকে। শাহানা নিজ হাতেই মেশিনে তৈরি করছেন কাঠের নান্দনিক শোপিস। বর্তমানে শাহানা ছাড়াও এই গ্রামের বহু মানুষ কাঠের শোপিস তৈরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। আলতাপোল গ্রামের মানুষ শোপিস তৈরি করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি যশোরের কেশবপুরের আলতাপোল গ্রামে সরেজমিন এসব দেখা যায়। চোখে পড়ে শোপিস তৈরির কর্মযজ্ঞ।
শাহানা বেগম জানান, নিজেদের দুই বিঘা জমি থাকলেও চাষাবাদ ভালো হতো না। ফলে সংসারে অভাব লেগেই ছিল। প্রায় ছয় বছর আগে তিনি ভারতে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। সেখানে শোপিস তৈরির কারখানা দেখে উদ্বুদ্ধ হন। জানতে পারেন কারখানা তৈরি করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু অর্থের অভাবে কারখানা দেয়া হয়নি। তবে মনের ভেতর বাসনা ছিল একদিন তিনি কারখানা দেবেনই। সেই থেকে ২০০৮ সালে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ‘দোয়েল’ দলের সভাপতি নাছিমা বেগমের পরামর্শে ভর্তি হয়ে সঞ্চয় জমাতে থাকেন। এক মাস পর ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আর এক বিঘা জমি বন্ধক দিয়ে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে মা-ছেলে মিলে শোপিস তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। যশোর থেকে মেশিন কিনে আনুষঙ্গিক কাজ শেষের পর কারখানার আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেন ছোট পরিসরে।
পরের বছর সমিতি থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এবং লাভের টাকা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আরো দু’টি মেশিন কেনেন। বর্তমানে তার কারখানায় তিনটি মেশিনে কাজ হয়। ঢাকা আহছানিয়া মিশনে ঋণ আছে ৩০ হাজার টাকা। শাহানা বেগমের শোপিস তৈরির কারখানায় মগ, জগ, গ্লাস, ডাল ঘুঁটনি, খুনতি, হামানদিস্তা, অ্যাশট্রে, পাউডার কেস, মসলাদানি, চুরির আলনা, চামচ, ডিম সেট, ডাব সেট, আপেল সেট, টাকা রাখার ব্যাংক, পাতিল, হারিকেন, খেলনা সেট, বেলুন-পিঁড়ি, ভিআইপি খুনতি টিফিন বক্স, হাঁড়ি, কড়াই ইত্যাদি তৈরি করা হয় তার মেশিনে। সব মিলিয়ে প্রায় দুই থেকে তিন শ’ আইটেম তৈরি করা যায় বলে জানান শাহানা বেগম তার মেশিন দিয়ে।
তিনি জানান, বিভিন্ন শোপিস তৈরিতে আম, জাম, কাঁঠাল, সেগুন, মেহগনি প্রভৃতি কাঠের প্রয়োজন হয়। এসব কাঠের দামও তুলনামূলক কম। স্থানীয় ২৩ মাইল এলাকা থেকে কাঠ কিনে তা শুকিয়ে কারখানায় বিভিন্ন ধরন ও আকারের শোপিস তৈরি করা হয় মুহূর্তের মধ্যেই। শোপিসগুলো আকারভেদে ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে যশোর, সাতীরা, খুলনা, মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়। শোপিস তৈরিপ্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিত্যক্ত কাঠ বের হয়, যা পরে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এই ব্যবসায় করেই শাহানা বেগমের পুঁজি এখন এক লাখ টাকা। বাড়ি তৈরির জন্য কিনেছেন ১৫ কাঠা জমি ও গরু।
শাহানা কারখানায় স্থানীয় লতিফের স্ত্রীও শোপিস তৈরির কাজ করেন। তিনি বলেন, অবসরে অলস সময় কাটাই সেই সময়টুকু কাজ করে কিছু অর্থ পাই, মন্দ কী? শাহানা বেগমের কারখানায় অনেক নারী কাজ করেন। জানা যায়, ২০ জনের বেশি নারী তার কারখানায় কাজ করেন। একটি শোপিস তৈরি করতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। প্রতিটি শোপিসের জন্য ২-১০ টাকা দেয়া হয়। একজন নারী গড়ে প্রতি মাসে এক থেকে দুই হাজার টাকা পান।
কাজের সার্বিক বিষয়ে শাহানা বলেন, আমি যে পেশায় নিয়োজিত তা খুবই ভালো লাগছে। স্বল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় শুরু করলেও বর্তমানে ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে চাই। এ জন্য আরো আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমানে সব খরচ বাদে মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়। এখন নিজের পাকা বাড়ি ও মালামাল পরিবহনে নিজস্ব গাড়ির স্বপ্ন দেখছেন তিনি। কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং আর্থিক স্বল্প পুঁজি বড় বাধা বলে তিনি মনে করছেন। এ ক্ষেত্রে বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কেশবপুর শাখার ম্যানেজার মো: মফিজুল ইসলাম জানান, শাহানা বেগম আমাদের পুরনো সদস্য। তিনি নিয়মিত সঞ্চয় জমা করেন এবং ঋণ আদান-প্রদান করে থাকেন। তিনি খুবই পরিশ্রমী। তার শোপিস তৈরির কারখানা দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি স্থানীয়ভাবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। পরিবারে আর্থসামাজিক অবস্থারও পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে শোপিস তৈরি করে সংসারের অভাব দূর করতে সক্ষম হয়েছেন।
এই গ্রামের এমনই এক গৃহবধূ শাহানা বেগম, যিনি সংসারের অভাব দূর করতে প্রায় ১৫ বছর ধরে কাঠের শোপিস তৈরি করে চলেছেন। স্বামী, এক ছেলে আর দুই মেয়ের সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। আখের চাষ, মাছের ঘের আর গরু পালনের পাশাপাশি সেলাই মেশিনও চালান তিনি। স্বামী আবদুল মালেক ফার্নিচারের রঙমিস্ত্রির কাজ করেন। ফলে আগের মতো এখন অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না তাকে। শাহানা নিজ হাতেই মেশিনে তৈরি করছেন কাঠের নান্দনিক শোপিস। বর্তমানে শাহানা ছাড়াও এই গ্রামের বহু মানুষ কাঠের শোপিস তৈরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। আলতাপোল গ্রামের মানুষ শোপিস তৈরি করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি যশোরের কেশবপুরের আলতাপোল গ্রামে সরেজমিন এসব দেখা যায়। চোখে পড়ে শোপিস তৈরির কর্মযজ্ঞ।
শাহানা বেগম জানান, নিজেদের দুই বিঘা জমি থাকলেও চাষাবাদ ভালো হতো না। ফলে সংসারে অভাব লেগেই ছিল। প্রায় ছয় বছর আগে তিনি ভারতে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। সেখানে শোপিস তৈরির কারখানা দেখে উদ্বুদ্ধ হন। জানতে পারেন কারখানা তৈরি করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু অর্থের অভাবে কারখানা দেয়া হয়নি। তবে মনের ভেতর বাসনা ছিল একদিন তিনি কারখানা দেবেনই। সেই থেকে ২০০৮ সালে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ‘দোয়েল’ দলের সভাপতি নাছিমা বেগমের পরামর্শে ভর্তি হয়ে সঞ্চয় জমাতে থাকেন। এক মাস পর ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আর এক বিঘা জমি বন্ধক দিয়ে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে মা-ছেলে মিলে শোপিস তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। যশোর থেকে মেশিন কিনে আনুষঙ্গিক কাজ শেষের পর কারখানার আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেন ছোট পরিসরে।
পরের বছর সমিতি থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এবং লাভের টাকা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আরো দু’টি মেশিন কেনেন। বর্তমানে তার কারখানায় তিনটি মেশিনে কাজ হয়। ঢাকা আহছানিয়া মিশনে ঋণ আছে ৩০ হাজার টাকা। শাহানা বেগমের শোপিস তৈরির কারখানায় মগ, জগ, গ্লাস, ডাল ঘুঁটনি, খুনতি, হামানদিস্তা, অ্যাশট্রে, পাউডার কেস, মসলাদানি, চুরির আলনা, চামচ, ডিম সেট, ডাব সেট, আপেল সেট, টাকা রাখার ব্যাংক, পাতিল, হারিকেন, খেলনা সেট, বেলুন-পিঁড়ি, ভিআইপি খুনতি টিফিন বক্স, হাঁড়ি, কড়াই ইত্যাদি তৈরি করা হয় তার মেশিনে। সব মিলিয়ে প্রায় দুই থেকে তিন শ’ আইটেম তৈরি করা যায় বলে জানান শাহানা বেগম তার মেশিন দিয়ে।
তিনি জানান, বিভিন্ন শোপিস তৈরিতে আম, জাম, কাঁঠাল, সেগুন, মেহগনি প্রভৃতি কাঠের প্রয়োজন হয়। এসব কাঠের দামও তুলনামূলক কম। স্থানীয় ২৩ মাইল এলাকা থেকে কাঠ কিনে তা শুকিয়ে কারখানায় বিভিন্ন ধরন ও আকারের শোপিস তৈরি করা হয় মুহূর্তের মধ্যেই। শোপিসগুলো আকারভেদে ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে যশোর, সাতীরা, খুলনা, মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়। শোপিস তৈরিপ্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিত্যক্ত কাঠ বের হয়, যা পরে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এই ব্যবসায় করেই শাহানা বেগমের পুঁজি এখন এক লাখ টাকা। বাড়ি তৈরির জন্য কিনেছেন ১৫ কাঠা জমি ও গরু।
শাহানা কারখানায় স্থানীয় লতিফের স্ত্রীও শোপিস তৈরির কাজ করেন। তিনি বলেন, অবসরে অলস সময় কাটাই সেই সময়টুকু কাজ করে কিছু অর্থ পাই, মন্দ কী? শাহানা বেগমের কারখানায় অনেক নারী কাজ করেন। জানা যায়, ২০ জনের বেশি নারী তার কারখানায় কাজ করেন। একটি শোপিস তৈরি করতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। প্রতিটি শোপিসের জন্য ২-১০ টাকা দেয়া হয়। একজন নারী গড়ে প্রতি মাসে এক থেকে দুই হাজার টাকা পান।
কাজের সার্বিক বিষয়ে শাহানা বলেন, আমি যে পেশায় নিয়োজিত তা খুবই ভালো লাগছে। স্বল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় শুরু করলেও বর্তমানে ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে চাই। এ জন্য আরো আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমানে সব খরচ বাদে মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়। এখন নিজের পাকা বাড়ি ও মালামাল পরিবহনে নিজস্ব গাড়ির স্বপ্ন দেখছেন তিনি। কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং আর্থিক স্বল্প পুঁজি বড় বাধা বলে তিনি মনে করছেন। এ ক্ষেত্রে বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কেশবপুর শাখার ম্যানেজার মো: মফিজুল ইসলাম জানান, শাহানা বেগম আমাদের পুরনো সদস্য। তিনি নিয়মিত সঞ্চয় জমা করেন এবং ঋণ আদান-প্রদান করে থাকেন। তিনি খুবই পরিশ্রমী। তার শোপিস তৈরির কারখানা দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি স্থানীয়ভাবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। পরিবারে আর্থসামাজিক অবস্থারও পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে শোপিস তৈরি করে সংসারের অভাব দূর করতে সক্ষম হয়েছেন।
Source: www.dailynayadiganta.com
পণ্য : | কাঠের শোপিস তৈরী |
সম্ভাব্য পুঁজি: | ৫০০০০০ টাকা থেকে ৭০০০০০ টাকা পর্যন্ত |
সম্ভাব্য লাভ: |
মাসে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
|
প্রস্তুত প্রণালি: |
বেঁচে যাওয়া কাঠ কেটে নতুন সেপ দিয়ে তার উপর নকশা করে পণ্য তৈরি করা হয় । পন্যের উপর বার্নিশ বা সাইনার দিয়ে বিক্রির জন্য দোকানে আনা হয়।
|
বাজারজাতকরণ: |
মার্কেটে দোকান নিয়ে এই ব্যবসা করা যায় ।
। |
যোগ্যতা: |
বিশেষ কোন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই । সৃজনশীল হলে এ ব্যবসায় ভালো করা সম্ভব।
|
Source: http://www.luckyideabd.com
কাঠের কারুকাজ করা ছোটখাটো জিনিসপত্র কোথায় কিনতে পাবো?
* ঢাকা কলেজের পাশে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের নিচ তলায় “ফাতেমা কটেজ” নামের দোকানটিতে কাঠের কারুকাজ করা বিভিন্ন জিনিস, যেমন- গয়নার বাক্স, চুড়ির বাক্স, ট্রে, টেবিল ল্যাম্প, কলমদানি, আয়না, ঘড়ি, ওয়াল শোপিস, সিন্দুক ইত্যাদি কিনতে পাবেন।
* দোয়েল চত্বরে পাবেন বেশ কিছু।
* গুলশান-২ এর dcc মার্কেটে প্রচুর পাবেন/ আর কিছু পাবেন আড়ং এ/ নিউ মার্কেটেও পাবেন
কারুকাঠের জিনিস
কাঠের কারুকাজ করা জিনিসপত্রে সাজানো ফাতেমা কটেজ অ্যান্ড ঝিনুকমালা কঙ্বাজার শোরুমটি। মিয়ানমারসহ সারা দেশ থেকে কুটির শিল্পের নানা পণ্যসহ কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবের সংগ্রহ আছে এখানে। এখানে পাবেন কাঠের তৈরি কোরআন শরিফ বঙ্, টি-টেবিল, টি-ট্রলি, শোপিস রাখার কর্নার র্যাক, বেডসাইড টেবিল, সিন্দুক, গয়নার বাঙ্, চুড়ির আলনা, ওয়াল শোপিস, আয়না, রেহাল ও কাঠের ফলের ঝুড়ি, কাঠের টিস্যু বঙ্, কাঠের ট্রে, টেবিল ল্যাম্প, ঘড়ি, কলমদানি ও শোপিস। এ ছাড়া আছে পিতলের হুক্কা, মেটালের গয়না, মেটাল শোপিস, শিংয়ের শোপিস, একতারা ইত্যাদি।
১৯৮৮ সালে ঢাকার নিউ সুপার মার্কেটে যাত্রা শুরু করে শোরুমটি। এরপর ২০০০ সালে এটি চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে স্থান পাল্টায়। দোকানের মালিক মো. আজিজ জানান, বিভিন্ন ধরনের উপহার কেনার জন্য এখানে অনেকে আসেন। মূলত শৌখিন মানুষরাই তাঁদের প্রধান ক্রেতা।
দরদাম
গয়নার বাঙ্ আকার ও ডিজাইন অনুযায়ী ৮০ থেকে ১২০০ টাকা, চুড়ির বাঙ্ ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, কোরআন শরিফ বঙ্ ৯০০ টাকা, কাঠের ট্রে ২৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কলমদানি ১২০ টাকা, ঘড়ি ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা, আয়না ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, রেহাল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ফলের ঝুড়ি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টিস্যু বঙ্ ৪৫০ টাকা, টেবিল ল্যাম্প ৫৫০ টাকা, টি-টেবিল ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, বেডসাইড টেবিল ১১ থেকে ১৫ হাজার টাকা, টি-ট্রলি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, কাঠের সিন্দুক ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, কর্নার শোপিস র্যাক ৪০০০ থেকে ৫৫০০ টাকা, ওয়াল শোপিস ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা, চুড়ির আলনা ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, কাঠের শোপিস ৪০০ থেকে ২০০০ টাকা, পিতলের হুক্কা ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, মেটালের গয়না ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মেটাল শোপিস ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, শিংয়ের শোপিস ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, একতারা ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঠের চামচ ও খুন্তি ৩০ থেকে ৫০ টাকা।
১৯৮৮ সালে ঢাকার নিউ সুপার মার্কেটে যাত্রা শুরু করে শোরুমটি। এরপর ২০০০ সালে এটি চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে স্থান পাল্টায়। দোকানের মালিক মো. আজিজ জানান, বিভিন্ন ধরনের উপহার কেনার জন্য এখানে অনেকে আসেন। মূলত শৌখিন মানুষরাই তাঁদের প্রধান ক্রেতা।
দরদাম
গয়নার বাঙ্ আকার ও ডিজাইন অনুযায়ী ৮০ থেকে ১২০০ টাকা, চুড়ির বাঙ্ ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, কোরআন শরিফ বঙ্ ৯০০ টাকা, কাঠের ট্রে ২৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কলমদানি ১২০ টাকা, ঘড়ি ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা, আয়না ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, রেহাল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ফলের ঝুড়ি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টিস্যু বঙ্ ৪৫০ টাকা, টেবিল ল্যাম্প ৫৫০ টাকা, টি-টেবিল ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, বেডসাইড টেবিল ১১ থেকে ১৫ হাজার টাকা, টি-ট্রলি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, কাঠের সিন্দুক ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, কর্নার শোপিস র্যাক ৪০০০ থেকে ৫৫০০ টাকা, ওয়াল শোপিস ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা, চুড়ির আলনা ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, কাঠের শোপিস ৪০০ থেকে ২০০০ টাকা, পিতলের হুক্কা ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, মেটালের গয়না ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মেটাল শোপিস ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, শিংয়ের শোপিস ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, একতারা ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঠের চামচ ও খুন্তি ৩০ থেকে ৫০ টাকা।
কাঠের কুটির শিল্পে স্বাবলম্বী কেশবপুরে ৪ গ্রামের মানুষ
কাঠের কুটির শিল্পে ভাগ্য বদলেছেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার ৪ গ্রামের মানুষ। কাক-ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অবধি এসব গ্রামরে সব বয়সের মানুষের ব্যস্ত সময় কাটে মোমদানি, ফুলদানি, চুড়ির আলনা, কলস, বাটিসহ বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী তৈরিতে। আর এ কাজের মাধ্যমে নিত্য আয়ের ৬ শতাধিক পরিবার এখন স্বাবলম্বী।
নব্বই এর দশকের শুরুর দিকে কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের এক ব্যক্তি ভারত থেকে শিখে এসে কুটির শিল্পের কাজ শুরু করেন। অল্পদিনেই সফল হন তিনি। তার দেখাদেখি আলতাপোল, কন্দর্পপুর, বড়েঙ্গা ও মঙ্গলকোটসহ আশপাশের গ্রামগুলোর অনেকেই সময়ের ব্যবধানে জড়িয়ে পড়েন এ শিল্পের সাথে। অধিক লাভবান হওয়ায় দিনে দিনে বাড়ছে এর ব্যাপকতা।
এসব কারখানায় ছোট-ছোট কাঠের টুকরা দিয়ে তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের মোমদানি, ফুলদানি, কলস, বাটি, পাউডার কেস, বয়াম, ডিম সেট, খুনতি, হামাম, পিঁড়ি, মেয়েদের চুড়ি রাখার আলনাসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
বছর দশেক আগেও অন্যের জমিতে কামলা খাটা মানুষগুলো কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করে আজ স্বাবলম্বী বলে জানালেন অজিয়ার রহমান নামের একজন কারখানার মালিক।
এখানে উৎপাদিত পণ্য সারা দেশে সমাদৃত হওয়ায় এর সাথে জড়িতদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানালেন কেশবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ রায়হান কবীর।
কেশবপুরের ৪ গ্রামে অন্তত ৪শ' কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মালিক-শ্রমিক, কাঠ ব্যবসায়ীসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কমপক্ষে ২০ হাজার লোক জীবিকা নির্বাহ করছেন।
নব্বই এর দশকের শুরুর দিকে কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের এক ব্যক্তি ভারত থেকে শিখে এসে কুটির শিল্পের কাজ শুরু করেন। অল্পদিনেই সফল হন তিনি। তার দেখাদেখি আলতাপোল, কন্দর্পপুর, বড়েঙ্গা ও মঙ্গলকোটসহ আশপাশের গ্রামগুলোর অনেকেই সময়ের ব্যবধানে জড়িয়ে পড়েন এ শিল্পের সাথে। অধিক লাভবান হওয়ায় দিনে দিনে বাড়ছে এর ব্যাপকতা।
এসব কারখানায় ছোট-ছোট কাঠের টুকরা দিয়ে তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের মোমদানি, ফুলদানি, কলস, বাটি, পাউডার কেস, বয়াম, ডিম সেট, খুনতি, হামাম, পিঁড়ি, মেয়েদের চুড়ি রাখার আলনাসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
বছর দশেক আগেও অন্যের জমিতে কামলা খাটা মানুষগুলো কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করে আজ স্বাবলম্বী বলে জানালেন অজিয়ার রহমান নামের একজন কারখানার মালিক।
এখানে উৎপাদিত পণ্য সারা দেশে সমাদৃত হওয়ায় এর সাথে জড়িতদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানালেন কেশবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ রায়হান কবীর।
কেশবপুরের ৪ গ্রামে অন্তত ৪শ' কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মালিক-শ্রমিক, কাঠ ব্যবসায়ীসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কমপক্ষে ২০ হাজার লোক জীবিকা নির্বাহ করছেন।
ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে শোপিস
তানজিনা ইভা : সারাদিন মানুষ কাজ-কর্ম শেষ করে ফিরে আসে তার ভালোবাসার নীড়ে। আর সেই স্থানটি যদি থাকে মনের মতো করে সাজানো, তাহলে তো কথায় নেই। আর এই ঘর সাজানোর জন্য শোপিস হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।
নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত সব পরিবারেই কম বেশি ফার্নিচার থাকে। সেগুলো হতে পারে কাঠ, বাঁশ, বেত অথবা লোহার। রুচিশীল মানুষ তার ঘরটি সাজায় মনের মতো শো-পিস দিয়ে। যারা তাদের ঘরটি সাজাতে চান মনের মতো করে, কিন্তু ভেবে পাচ্ছেন না কোথায় কোন জিনিসটা রাখবেন তাদের জন্যই এ আয়োজন ।
এক সময় মানুষের ভাবনা ছিল শো-পিস শুধু শোকেজেই মানায়। তাই তারা শখের ছোট ছোট শো-পিচগুলো সাজিয়ে রাখেন শুধুমাত্র শোকেজেই। কিন্তু এখন সেই ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তন এসেছে মানুষের রুচিরও। এ জন্য শুধু শোকেজ নয়, এখন তা ঘরের সব জায়গাতেই সাজিয়ে রাখা যায়।
আপনার বাসায় কেউ এলে প্রথম যে জায়গাটিতে বসবেন তা হচ্ছে ড্রয়িং রুম । আর তাই এই রুমটিকে সাজাতে ব্যবহার করতে পারেন মাঝারি কিংবা একটু বড় ধরনের শো-পিস। সেখানে সোফা কিংবা অন্যান্য ফার্নিচার যদি কাঠের হয়, তবে কাঠের শো-পিসই সেখানে মানাবে ভালো। আর যদি ফার্নিচারগুলো বেতের হয় তবে সেখানে বাঁশ অথবা বেতের যে কোনো ধরনের শো-পিস রাখা যেতে পারে। তবে এখানে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে ঘরের আকার কেমন। যদি ঘরটি বড় হয় সেখানে একটু বড় ধরনের শো-পিস আর যদি ছোট হয় তবে একটু ছোট শো-পিস রাখলে মানাবে ভালো । কিছু সাধারণ, কিছু মডার্ন, ভিক্টোরিয়ান কারুকাজ বেশি অথবা রোমান্স স্টাইলের শো-পিচ ড্রয়িং রুমে রাখা যেতে পারে । মূর্তি, কাঠের পাটাতন বিশিষ্ট শো-পিস, বাঁশ অথবা বেতের শো-পিসগুলো এখানে রাখলে মন্দ লাগবে না ।
ডাইনিং রুমে খুব বেশি শো-পিস না রাখাটাই ভালো । তবে বেসিনের পাশে ফুল কিংবা সাবান রাখার কেজটাও হতে পারে কোনো শো-পিস।
ডাইনিং রুমে খুব বেশি শো-পিস না রাখাটাই ভালো । তবে বেসিনের পাশে ফুল কিংবা সাবান রাখার কেজটাও হতে পারে কোনো শো-পিস।
সাধারণত বেড রুমগুলোতে থাকে কাঠের, ষ্টিল অথবা বেতের তৈরি খাট। আবার কেউ কেউ পছন্দ করেন ফ্লোরিং করতে। এ জন্য যেখানে যে ধরনের ফর্নিচার ব্যবহার করা হয় সেখানে সেই ধরনের শো-পিস রাখাটায় ভালো। ড্রেসিং টেবিলে থাকতে পারে জুয়েলারি বক্স, লিপিষ্টিক হোল্ডার অথবা চিরুনী রাখার বক্স।
বাচ্চাদের রুমে শো-পিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত তা হচ্ছে বাচ্চাটি ছেলে না মেয়ে। ছেলে হলে স্পাইডার ম্যান, আবার মেয়ে হলে বার্বিকিউ জাতীয় কার্টুনের শো-পিস দেওয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের শো-পিসের ক্ষেত্রে লেদার এবং কাঠের তৈরি শোপিসই ভাল মানায়। কারণ এগুলো সহজে ভেঙ্গে বা ছিঁড়ে যাবে না।
উপহার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে শো-পিস। সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই। এমন অনেক শো-পিস রয়েছে যেগুলো দেখলেই কিনতে ইচ্ছে করে। তাই বিয়ে কিংবা জন্মদিনসহ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের উপহার হিসেবে শো-পিস দেওয়া যেতে পারে। আবার ধরুন যে কোনো ধরনের অকেশন-যেমন বন্ধু দিবস, ভালোবাসা দিবস, মা দিবসে উপহার দেওয়া যেতে পারে শো-পিস। বাবা-মা, কিংবা দাদা-দাদিকে এমন কিছু শো-পিস দেওয়া যেতে পারে যেগুলো পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
দামি শোপিস কিনতে চাইলে অটবি, হাতিল, ফিদার টাচ, আয়ডিয়াস, যাত্রা কিংবা সোর্স-এ যাওয়া যেতে পারে । আবার নিউমার্কেট এবং আজিজ সুপার মার্কেটেও সব ধরনের শোপিস পাওয়া যায়।
ফরিদুলের শোপিস ছয় দেশে
নাটোরের ফরিদুল গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর বাজারে গড়ে তুলেছেন নিজের শোপিস দুনিয়া। তার হাতে তৈরি কাঠের শোপিস এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে ছয়টি দেশে রফতানি হচ্ছে।
ফরিদুল তার প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন আর নাছির ক্র্যাফট। এখানে কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে তাজমহল, হারিকেন, চার্জার হারিকেন, টেবিল ল্যাম্প, ফুলদানি, কলমদানি, জুয়েলারি বঙ্, টেবিল ঘড়ি, দেয়াল ঘড়ি, পাউডার কেস, মোমদানি, সিঁদুরদানি ও রিং কেইসসহ হরেক রকম সব পণ্য। নিখুঁত হাতে কাঠ খোদাই করে তৈরি এসব শোপিস অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাঁচ বছর ধরে শোপিস তৈরি করে চলেছেন ফরিদুল। পুঁজি সঙ্কটের মধ্যেও তিনি থেমে যাননি।
তার পুরো নাম ফরিদুল ইসলাম। সিংড়া উপজেলার সোনাপুর গ্রামে তার বাড়ি। প্রাইমারি শিক্ষা শেষ করার পর অভাব-অনটনের কারণে আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি তার। অভাবের কারণে একদিন ফরিদুল চলে যান খুলনায়। সেখানকার এক স্থানীয় শিল্পকারখানায় তিন থেকে চার মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে চলে যান চট্টগ্রামে। সেখানে প্রায় দুই বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে আসেন খুলনায়।খুলনা নগরীর গগন বাবু রোডের ‘সৃজনী কারুকর্মে’ সাড়ে ৪ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। পরে ২০০৪ সালে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর বাজারে ঘরভাড়া নিয়ে নিজেই গড়ে তোলেন কারখানা। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে শোপিস তৈরি করার অবস্থা তার ছিল না। ফরিদুলের আগ্রহ আর শৈল্পিক নির্মাণশৈলী দেখে আগ্রহী হন গ্রাম্য চিকিৎসক আবদুর রহিম। তিনি ফরিদুলকে ৩০ হাজার টাকা ধার দিয়ে সহযোগিতা করেন। এরপর আর ফরিদুলকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। খবর রাইজিংবিডি
এখন তার কারখানায় ৫ জন দক্ষ কারিগর রয়েছে। আর এরা সবাই খুলনা থেকে এসেছেন। সবাই কমিশন ভিত্তিতে পণ্য তৈরি করেন।তৈরির উপকরণ : এসব শোপিস তৈরির প্রধান উপকরণ মেহগনি ও খেইয়া বাবলা (স্থানীয়ভাবে জিলাপির গাছ হিসেবে পরিচিত)। আর এসব গাছের কাঠ কেটে ও ঘষে মসৃণ করার পরই তৈরি হয় এ পণ্য।
বিক্রির বাজার : ফরিদুলের তৈরি পণ্য ঢাকার চন্দ্রিমা কটেজ, বিভিন্ন সুপারমল, মিরপুর রোডের আইডিয়াল কার্ড, রাজশাহী নিউ মার্কেটের কুঠিঘর, উত্তরাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্র রংপুরের ভিন্নজগৎ, দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী, নওগাঁর পাহাড়পুরসহ বিভিন্ন জায়গায় পাইকারি দামে বিক্রি করা হয়।
এছাড়া কারখানা থেকেই হকাররা পাইকারি দামে কিনে নিয়ে গ্রামগঞ্জে কিংবা হাটে-বাজারে এবং গ্রামের বিভিন্ন সমাবেশ, ইসলামী জলসা, স্কুল-কলেজের উৎসবসহ নানা অনুষ্ঠানে বিক্রি করে থাকে।
বিদেশের চাহিদা : ঢাকার টোরাস লিমিটেডের মাধ্যমে ফরিদুল এখন ইতালি, জ্যামাইকা, জার্মানি, আরব আমিরাত, মরিশাস, দুবাই, আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রে হাতের আংটি, স্যুপের বাটি, চুড়ি, হাতের বালা, মোমদানি, তাজমহল, চার্জার হারিকেন, ডিশ আয়না, টেবিল আয়না, ডিজিটাল আয়না, পকেট আয়না ও রিংসহ হরেক রকম পণ্য পাঠান।
পাইকারি বিক্রেতা ঢাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের বিসমিল্লাহ কটেজের স্বত্বাধিকারী হেলাল খান বলেন, ‘ফরিদুলের শোপিস দেশের অন্যান্য কারখানার চেয়ে অনেক ভালো ও নিখুঁত। দামেও অপেক্ষাকৃত কম। ছাত্রছাত্রী ও বাসাবাড়ির লোকজন এগুলো বেশি কিনে থাকেন।’ উত্তরা ১/২-৯৯ সুপার মলের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, ফরিদুলের পণ্যের ফিনিশিং অনেক ভালো।
রাজশাহী নিউমার্কেটের কুঠিঘরের মালিক নাগরকুমার ঘোষ জানান, পণ্যের মান অনেক সহনীয় পর্যায়ে থাকায় ক্রেতারা কেনেন ভালো। অবস্থা এমন হয় যে, অনেক সময় সরবরাহ করে কুলিয়ে ওঠা যায় না।
ফেরিওয়ালা মাহবুব হোসেন ও সাইফুল ইসলাম জানান, কমদাম এবং নিখুঁত কারুকাজ হওয়ায় বিক্রি ভালো হয়। কিন্তু কারখানায় গিয়েও চাহিদামতো পণ্য ও সরবরাহ পাওয়া যায় না। ঢাকার টোরাস লিমিটেডের মালিক মাকসুদ খান বলেন, ‘দেশের অনেক কারখানার তৈরি শোপিস বিদেশে পাঠিয়ে থাকি। ফরিদুলের কারখানার স্যুপের বাটি, ডিজিটাল হারিকেন, তাজমহল, মোমদানি ও মেয়েদের ফ্যাশনের জন্য হাতের চুড়ি ও বালার চাহিদা বেশ। ফরিদুল বলেন, ‘এখন মাসে ২ লাখ টাকার পণ্য তৈরি করে থাকি।
No comments:
Post a Comment