Thursday, April 11, 2013

যত সব উড়–ক্কু 


গিরগিটি আছে নানা প্রজাতির। তার মধ্যে কয়েকটি প্রজাতি আবার কৌশল করে উড়ে বেড়াতে পারে। প্রাণিজগতে এমন অনেক প্রাণীই আছে যারা ডানা ছাড়াই উড়তে পারে। এমন কয়েকটি প্রাণী নিয়ে লিখেছেন মোস্তাক চৌধুরী
সাপ : সাপ হচ্ছে সরীসৃপ প্রাণী। বুকে ভর দিয়ে চলাফেরা করে এই প্রাণীটি। আবার পৃথিবীতে এমন প্রজাতির সাপ আছে যারা বাতাসে ভেসে পথ পাড়ি দিতে পারে। এই সাপদের বলা হয়ে থাকে-উড়ুক্কু সাপ। এই উড়–ক্কু সাপ বিশেষ এক কৌশল অবলম্বন করে বাতাসে ভেসে থাকার জন্য। শিকার ধরার জন্য অথবা এক গাছ থেকে অন্য গাছে উড়ে যাওয়ার জন্যই প্রধানত এসব উড়–ক্কু সাপ বাতাসে ভেসে বেড়ানোর কৌশল অবলম্বন করে। তাদের শারীরিক গঠনও একটু আলাদা ধরনের। একটু ব্যতিক্রমী! আর তা ব্যবহার করে এসব সাপরা নিজের শরীরটাকে প্রথমে একেবারে কুঁচকে ফেলে তারপর লেজের শেষ মাথা দিয়ে বিশেষভাবে অনেক জোরে মাটিতে ধাক্কা দেয়। সেই ধাক্কায় যে গতি উৎপন্ন হয় তা ব্যবহার করেই এরা মাথাটাকে শূণ্যের দিকে দিয়ে শরীরের ভর টেনে নেয় সামনের দিকে। গায়ের ওজন হালকা হওয়ায় এরা বেশ অনেক দূর পর্যন্তই ভেসে যেতে পারে।
গিরগিটি : গিরগিটি আছে নানা প্রজাতির। তার মধ্যে কয়েকটি প্রজাতি আবার কৌশল করে ভেসে মানে উড়ে বেড়াতে পারে। যেসব গিরগিটি ভেসে ভেসে উড়ে বেড়াতে পারে তারা দৈহিকভাবে কিছু বিশেষত্বের অধিকারী। যেসব গিরগিটিরা বাতাসে ভেসে বেড়ায় তাদের শরীরের দুই পাশে থাকে একটু বাড়তি চামড়া। এই চামড়া অনেকটা পাখির ডানার মতো কাজে দেয়। এই চামড়া আবার গিরগিটিরা ভাঁজ করে লুকিয়ে রাখতে পারে তাদের শরীরের দু’পাশে।
ব্যাঙ : ব্যাঙ আছে নানা প্রজাতির। তার মধ্যে একটা প্রজাতি হচ্ছে ‘গেছো ব্যাঙ’, গাছে গাছেই থাকে আরকি! এই গেছো ব্যাঙরা আসলে থাকে ঝোপে-ঝাড়ে, বনে-বাদাড়ে, গাছে গাছে। এরা কিছু বিশেষ ধরনের শারীরিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়। অন্যান্য ব্যাঙের চাইতে দেখতে এরা অবশ্য একটু কমই বেঢপ আকৃতির হয়। এদের হাত-পা একটু বেশিই লম্বা লম্বা ধরনের আর সেই লম্বা লম্বা হাত-পায়ের সাহায্যে সে ধাক্কা দিয়ে উঠে পড়ে শূন্যে। বাতাসে ভেসে সে এভাবে পাড়ি দিতে পারে অনেকটা পথ। তারপর আবার যেখানে খুশি সেখানে নেমে আসতে পারে মাটিতে।
লেমু : লেমুর আসলে বানর প্রজাতির প্রাণী। তবে এর শরীরের গঠনের কারণে তাকে দেখায় বানর থেকে পুরোপুরিই আলাদা। লেমুরের হাত-পা চারটা আর লেজ একটা। তবে ব্যতিক্রমটা হচ্ছে তার কানের নিচ থেকে ছড়িয়ে দু’হাতের কব্জি আর দুই পায়ের গোড়ালি হয়ে লেজের আগা পর্যন্ত একটু বিশাল চামড়া জোড়া দেয়া আছে। আর এর কারণেই সে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে অনেকটা পাখির মতোই। লেমুর থাকে গাছে গাছে। উঁচু উঁচু গাছ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে নিজের হাত-পা লেজ সব ছড়িয়ে দেয়। আর তখন যে চামড়াটা দিয়ে এসব যুক্ত থাকে সেই চামড়াটা যায় ছড়িয়ে। লেমুর তখন হয়ে যায় একটা লোমওয়ালা ঘুড়ির মতো।
কাঠবিড়ালি : কাঠবিড়ালি বিড়াল প্রজাতির প্রাণী হলেও এদের শরীরের গঠন একেবারেই ভিন্ন এবং এদের বসবাস গাছে। কাঠবিড়ালির লেজ তার শরীরের চাইতে বড় এবং লোমশ। এমন কিছু কাঠবিড়ালি আছে যারা বাতাসে ভাসতে পারে। আর এ ক্ষমতা তারা এগাছ থেকে ওগাছে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করে। এ জন্য কাঠবিড়ালিরা কোনো গাছের উঁচু ডাল থেকে লাফিয়ে শূন্যে ভাসতে থাকে।

Wednesday, April 3, 2013

ভাসমান শহর ভাসমান গ্রাম

ভাসমান শহর ভাসমান গ্রাম 

ওয়াটার ভিলেজ মূলত পানির ওপরে বসবাস করা মানুষের বাড়িঘর যা সচরাচর পানির ওপরেই তৈরি হয়। বাড়িগুলো পানিতে ভাসে। আবার কখনো স্থির দাঁড়িয়ে থাকে। এ যেন এক ভাসমান আবাস। আবার পৃথিবীর কোনো কোনো জায়গায় এই ভাসমান শহরগুলোই বর্তমানে পর্যটকদের বিরাট আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কয়েকটি ভাসমান শহর ভাসমান গ্রাম নিয়ে লিখেছেন ওবায়দুল গনি চন্দন
কো পানায়ী গ্রাম
কো পানায়ী একটি মুসলিম গ্রাম। এটা থাইল্যান্ডের পাং এন গা রাজ্যে অবস্থিত। এই গ্রামে অন্তত দুইশ’ পরিবার বাস করে। অন্যভাবে বলা যায় প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ মানুষ এখানে বসবাস করে। এই গ্রাম গড়ে উঠেছে দুইটি সামুদ্রিক মুসলিম পরিবারের আগমন থেকে। এই গ্রামে একটি মুসলিম বিদ্যালয় আছে যেখানে প্রতি সকালে নারী এবং পুরুষ উভয়ই অংশগ্রহণ করে। এই গ্রামটি বর্তমানে টুরিস্টদের জন্য খুব বেশি সুবিধা গড়ে ওঠেনি। টুরিস্টরা এখানে আসতে পারেন শুধু শুষ্ক মৌসুমে। এখানে একটি ফুটবল মাঠও আছে যেটা ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল ১৯৮৬-এর প্রেরণায় গড়া।
হা লং বে ভাসমান গ্রাম
এখানকার অধিকাংশ মানুষই সমুদ্রে ভাসমান। এই দ্বীপের অধিকাংশ মাটি চাষ করার একদমই অনুপযোগী। হা লং বে মাছ এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক খাবারের জন্য বিখ্যাত। তারা তাদের ধরা মাছ বিক্রি করে বড় বড় নৌকার মালিকের কাছে। তারা প্রতি সকালে বাজারে তাজা মাছের সরবরাহ করে। হা লং বে ভাসমান গ্রামটি ভিয়েতনামে অবস্থিত।
গিয়েথ্রন
এই গ্রামের অধিকাংশ লোকজন চলাচল হয় পানির ওপর দিয়ে এবং এটা করে ‘পান্টার’ কিছু নৌকা যেটায় ইলেকট্রিকম মটর লাগানো আছে। তারা সাধারণত গ্রামের শান্তি বিনষ্ট করে না। অনেক বাড়িঘর এর আশপাশের ছোট ছোট দ্বীপে অবস্থিত যেখানে যাতায়াত করার একমাত্র মাধ্যম হলো কাঠের ব্রিজ। এই গ্রামে প্রায় ২৬২০ জন বাসিন্দা রয়েছেন। গ্রামটি নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত।


ক্যাম্পং আয়ার
সুলতান ওমর আলি সাইফুদ্দিন মসজিদ ব্র“নেই নদীতে একটি কৃত্রিম লেগুন তৈরি করেছে যেটা ব্রিজের মাধ্যমে সংযোগ করে ওয়াটার বিলেজকে। এই ভিলেজে ওয়াটার ট্যাক্সি আছে আসা-যাওয়ার জন্য। আরো আছে স্কুল, হসপিটাল, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট, মসজিদ এবং পেট্রল স্টেশন। অনেকেই এই গ্রামকে দেখে অবজ্ঞা করেন। না দেখেই চলে যান কিন্তু তারা জানে না এই গ্রামে বর্তমান সভ্যতার আধুনিক সবকিছুই রয়েছে। এখানে রয়েছে এয়ার কন্ডিশন, স্যাটেলাইট ক্যাবল, ইন্টারনেট। ধারণা করা হয় এই গ্রামে মানুষ বসবাস করে ১৩০০ বছর আগে থেকে। ক্যাম্পং আয়ার ব্র“নাইয়ে অবস্থিত।
Kampong Ayer in Brunei - a community by the water:



উরোস ফ্লোটিং ভিলেজ
পেরুর এই গ্রামটি সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে ভাসমান অবস্থা হারিয়ে যাওয়া ট্রাভেলাররা। সত্যি বলতে এটা একটা টুরিস্ট ট্র্যাপ। এই গ্রামের অধিকাংশ ছোট ছোট দ্বীপ ভ্রমণকারীদের থেকে বিচ্ছিন্ন এবং তারা এখনো পুরনো আমলের মাছ ধরার পদ্ধতি অবলম্বন করে।
Uros' Floating Islands in Lake Titicaca:


হুজহেন
চীনের হুজহেনের ভাসমান পাথরের ব্রিজগুল প্রায় দুই হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে। এতার পাথুরে রাস্তা কোনো নকশা ছাড়াই হয়েছে এবং এটা অতি সূক্ষ্ম। এটা পাথর কেটে বানানো একটি সুন্দর পথ। এই পানিপথ দিয়ে যেতে একটা আলাদা রোমাঞ্চ অনুভব হয় সঙ্গে সঙ্গে অনুভব করা যায় এটা সাংস্কৃতিক ইতিহাস।
ঝৌঝুয়াং
ঝৌঝুয়াং চীনের একটি আকর্ষণীয় ভাসমান শহর। এটা চীনের শুঝৌ শহরের ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত। এই শহরটিতে রয়েছে প্রাচীন আমলের ঘরবাড়ি, ওয়াটার ক্রসিং, প্রাচীন আমলের ব্রিজগুলো। এই শহরটিকে বলা হতো পূর্বের ভেনিস।
গ্যানভি
গ্যানভি আফ্রিকার ভেনিস হিসেবে পরিচিত। এই গ্রামটি গড়ে উঠেছে বেনিনের একটি লেকে। এই গ্রামের জনসংখ্যা আনুমানিক ২০ হাজার। এই গ্রামটি আফ্রিকার সবচেয়ে বড় লেক ভিলেজ হিসেবে পরিচিত। গ্যানভি বেনিনে অবস্থিত।