Saturday, August 22, 2015

প্রযুক্তি- বইকে কেড়ে নিচ্ছে নাকি দিচ্ছে নতুনত্ব?



সাদিয়া ইসলাম : প্রযুক্তির উত্কর্ষ দিনকে দিন বেড়েই চলছে। আর একের পর এক মানব জীবনের নতুন নতুন সব ক্ষেত্রে এটি ফেলে চলেছে নিজের প্রভাব। মানুষ তার অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবা কথা আর স্মৃতিগুলো সবসময়েই আটকে রাখতে চেয়েছে কাগজের পাতায়। কলমের নানারকম আঁকিবুকিতে নিজেদের অভিজ্ঞতা আর চিন্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছে নতুন প্রজন্মের কাছে।
আর মানুষের এই অক্লান্ত চেষ্টার ফলেই সেই সুদূর অতীত থেকে এখন অব্দি রচিত হয়েছে লাখ লাখ বই। নানা ভাষার বই, নানা ধারার বই। মানব সভ্যতার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশই হয়ে গিয়েছে বই এখন। কিন্তু প্রযুক্তি ছেড়ে কথা বলেনি মানুষের এই কালো কালির স্বর্ণসম্ভারকেও। ধীরে ধীরে আরো দশটা ক্ষেত্রের মতন ছাপা অক্ষরের সম্পদ বইকেও নিয়ে এসেছে প্রযুক্তি তার হাতের মুঠোয়।
তৈরি হয়েছে ই-বুক, ই-লাইব্রেরি, ই-বুকশপসহ আরো হাজারটা জিনিস, যাতে করে ছাপা হরফের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা পড়ে গিয়েছেন দুঃশ্চিন্তায়। সত্যিই কী একটা সময় সত্যিকারের বই পড়ার মতন মানুষ থাকবে না আর? সবাই কী হয়ে পড়বে একেবারেই প্রযুক্তিনির্ভর? অ্যামাজন, রকমারী, বেমস অ্যান্ড নোবেলস নুকসহ আরো অনেক ই-বই এর সম্ভার প্রতিনিয়তই এই শঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে সবার মনে।
কোমা প্রেসের ডিজিটাল সম্পাদক জিম হিংকস এ নিয়ে বলেন, ‘সাহিত্য ইন্টারনেটের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছে!’ কে জানে! সত্যিই হয়তো তাই। কিন্তু একেবারেই কী সত্যি কথাটা? তাহলে এতদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মানুষ কেন বই কেনে? কেন বই মেলা হয়? কেন এখনো লাইব্রেরি টিকে আছে আর টিকে আছে ছাপা হরফের বইগুলো? আসুন জেনে নিই।
ই-বুক
নতুনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। আর তাই নতুন কোন কিছুর সন্ধান পেলে মানুষ সেদিকেই মনযোগ দেয় প্রথমে। ঝাপিয়ে পড়ে। সেটা ভালোবেসেই হোক কিংবা না বেসে। আর ঠিক তেমনটাই লক্ষ্য করা যাবে যদি বছর বছর ই-বুক বিক্রির হিসেবটা দেখে নেওয়া যায়। হিসেবে দেখা যায়, আমাজান কিন্ডেল যেখানে ২০০৯ সালে ১৩.৪৪ মিলিয়নের ব্যবসা করেছে, সেখানে ২০১১ তে এসে সেটা নেমে গিয়েছে ৯.৭ মিলিয়নে। বেমস অ্যান্ড নোবেলস নুক প্রতিবছর ৭০ মিলিয়ন ডলারের পাঠক হারাতে শুরু করেছে। কমেছে বাকিদের ব্যবসাও! এ ছাড়া ২০১৪ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে ই-বুক এর জন্যে মানুষ মোট খরচ করেছে ৩৯৩ মিলিয়ন। যেখানে কিনা ছাপা হরফের বই এর জন্যে তারা ব্যয় করেছে ১.৭ বিলিয়ন। এই সংখ্যাগুলো হিসেব করলেই একজন অনভিজ্ঞ মানুষও এক কথায় সিদ্ধান্তে চলে আসতে পারবে যে ই-বুকের চাহিদা কমে যাচ্ছে।

একটা সময় হঠাৎ করেই ই-বুক এর প্রতি আকর্ষণ বেড়ে গেলেও বর্তমানে আবার ফিরে আসছে ছাপা বই। ছাপা বই এর চাহিদা হঠাৎ করে কমে যেতে শুরু করলেও সেই গতি এখন ধীর হয়েছে। কিছুদিন আগেও ছাপা বই এর দিন শেষ হয়ে এসেছে বলে মনে করা হলেও ব্যাপারটা এখন আর অতটা গ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছেনা। ধ্বংস থেকে অনেক অনেক দূরেই রয়েছে এখনো ছাপা বই। বর্তমানে বড়দের কিছু বই, আবেগঘন উপন্যাস ও ফিকশন ছাড়া আর সব বই এর চাহিদা আটকে রয়েছে সেই ছাপা বই এর ভেতরেই। বিশেষ করে রান্না ও ধর্মীয় বই এর চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে এবং সেটা একমাত্র ছাপা অক্ষরেই।
পার্থক্য কতটা?
সত্যিই কী ই-বুক আর সত্যিকারের বই খুব বেশি আলাদা কিছু? ২০১৪ সালে একটি পদক্ষেপ নেওয়া হয় এই ব্যাপারে। ‘দ্য গার্ল হু লস্ট হার নেম’ নামের একটি অনলাইন বই বের করা হয় বাচ্চাদের জন্যে। অষ্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনের বাচ্চাদের কাছে প্রচন্ডরকম জনপ্রিয় হয় বইটি। সি বুক নামক স্প্যানিশ কোম্পানি ই-বুকগুলোকে ছাপা বই করে বিক্রি করার একটা প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং সেগুলো অনলাইনেই কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু তাই নয়, এভাবে তারা বিক্রি করতে শুরু করেছে ই-কার্ডও। এ প্রসঙ্গে সি বুকের পরিচালক ড. রোজা সালা রোজ বলেন, ‘এখনো অব্দি অনেক বইয়ের দোকান মনে করে ই-বুক তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলবে।’

লন্ডনের একটি টেক-স্টার্ট আপ বুকিনডি প্রতিনিয়ত ছাপা বই কিনতে মানুষকে উত্সাহিত করে যাচ্ছে তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে। গুগল ক্রোমে অ্যামাজনের বই দেখতে গেলে সেখানেও নিকটস্থ বই এর দোকানে খুঁজতে থাকা বইটি কত টাকায় পাওয়া যাবে সেটাও বলে দিচ্ছে। এভাবে রোজই নিজেদের মতন করে প্রযুক্তি ছাপা বইকে সাহায্য করে আসছে।
পুরনো মদ নতুন বোতলে
পেঙ্গুইন বুক ডিজিটালের প্রধান অ্যানা রেফার্টি জানান, ‘ইদানিং প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলেই অনেক অনেক পুরনো ব্যাপার আমাদের সামনে আসছে। পুরনো লেখা ও লেখকের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছি আমরা।’ নিজের কথার পক্ষে চার্লস ডিকেন্সের ১৮৩৬ সালে প্রকাশিত দ্য পিকউইক পেপার্সের কথা উল্লেখ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ইন্টারনেটের এই সহজপ্রাপ্যতা লেখকদের জন্যেও অনেক বেশি সুবিধা তৈরি করে দিচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
নিজেদের মেধা প্রকাশ করতে বর্তমানে লেখক আর প্রকাশকদেরকে অনেকটা কম পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। অ্যানা বলেন, ‘এটা লেখকদেরকেও সরাসরি বই প্রকাশ করবার উপায় করে দিচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে নিজের পাঠকদের কাছে যেতে ও নিজের লেখাকে অনুভব করার সুযোগ করে দিচ্ছে।’
এর পাশাপাশি বর্তমানে লেখকের কন্ঠকেও পাঠকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ইন্টারনেট। প্রযুক্তির এই উত্কর্ষের ফলে বাসায় বসেই লেখকের নিজের কন্ঠের আবৃত্তি কিংবা পাঠ শুনতে পাচ্ছে শ্রোতারা। ফলে আনন্দের একটা ভিন্নমাত্রা যেমন তৈরি হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে বিশ্লেষনের একটা ক্ষেত্রও। লেখক সহজেই বুঝতে পারছেন যে, ঠিক কোন জায়গায় এসে পাঠক তাদের আকর্ষণ হারাচ্ছে এবং শোনা বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে নিজেকে যাচাই এরও একটা ভালো উপায় করে দিচ্ছে প্রযুক্তি লেখকদেরকে।
অনলাইনে রেটিংসের ব্যাপার রয়েছে। সেখানে পাঠকের মন্তব্য করার জায়গাও আছে। ফলে কোন বইটি ভালো কাজ করছে, কোনটি নয়, সেটা জানবার জন্যে এখন আর লেখককে প্রকাশকের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হচ্ছে না। প্রকাশকও খুব সহজেই পাঠকের চাহিদা বুঝতে পারছেন। আর অন্যদিকে পাঠকও একটি বই এর রেটিংস ও মন্তব্য পড়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে যে, ঠিক কোন বইটা সে পড়তে চায়।
প্রতিযোগিতা
ই-বুক যতটা না জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বর্তমানে সবখানে, ততটাই হারাচ্ছেও। আর এর পেছনে কাজ করছে মোবাইলের উত্কর্ষতা। ‘প্রতিনিয়ত মোবাইলের স্ক্রিনগুলো বড় হচ্ছে, আর সঙ্গে সঙ্গে এটি তার জমকালোভাবটাও হারিয়ে ফেলছে’-বলেন জিম হিংকস।

অনেক ধরনের নতুন নতুন ব্যাপার তৈরি করে সবাইকে ই-বুক এর দিকে টেনে রাখতে চাইছে প্রতিষ্ঠানগুলো। রুক নামের একটি ই-প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বিনা মূল্যেই কিছু কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় বই ডাউনলোডের সুবিধা দিচ্ছে সবাইকে।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বুকমেশিনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা লরা সামারসের মতে বর্তমানে মোবাইলে খেলা, খবরের কাগজ, অ্যাপসসহ আরো অনেক বেশি জিনিসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে ই-বুককে। ফলে খানিকটা হলেও মনযোগ হারাচ্ছে এটি পাঠকদের। আর সত্যি বলতে কী কোথাও বসে হাতে এক কাপ কফি নিয়ে বই পড়া আর একটা যন্ত্রের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার ভেতরে অনেকটা পার্থক্য রয়েছে।
এ ছাড়া দিনকে দিন নানারকম প্রযুক্তির বাজে দিকগুলোর সামনে আসতে শুরু করেছে। মানুষ খুব দ্রুত নতুন সমস্যার মুখোমুখি হতে শুরু করেছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। কখনো সেটা শারীরিক, কখনো মানসিক। আর তাই বলা যায়, ই-বুক মানব জীবনকে যতটা বেশিই আচ্ছন্ন করে ফেলুক না কেন ছাপা হরফের বই এর চাহিদা কখনোই শেষ হয়ে যাবেনা! প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নয়, সহায়ক হিসেবেই প্রতিটা সময় কালো কালিতে ছাপা বই এর পাতার পাশে থাকবে ই-বুক সবসময়।

কর্মজীবী মায়েদের সন্তানকে দিবাকালীন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের খোঁজখবর



কর্মজীবী মা-বাবা অফিস সময়টায় শিশুকে নিরাপদে রাখতে খোঁজেন দিবাযত্ন কেন্দ্র। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে নগরে গড়ে উঠেছে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, যেখানে নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে দেখাশুনা করা হয়। জেনে নিন কিছু চাইল্ড ডে কেয়ার সেন্টারের নাম-ঠিকানা ও ফোন নম্বর
শিশু আলয় ডে কেয়ার সেন্টার, আইসিডিডিআরবি
এটি দুই মাস থেকে চার বছর বয়সের শিশুদের পূর্ণাঙ্গ ডে কেয়ার সেন্টার।
ঠিকানা : ৬৮ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সরণি, মহাখালী, ঢাকা-১২১২।
ফোন : ৮৮৬০৫২৩-৩২ (এঙ্. ৩৬৪৬)।
কেন্দ্রটি শুক্র ও শনিবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

খিলগাঁও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র
ঠিকানা : ৯২১ ব্লক-সি, রোড-৭, খিলগাঁও, ঢাকা।
ফোন : ০১৭১১৪৬৬০৯২।

ছায়ানীড় প্রি-স্কুল ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি কক্ষ নিয়ে। কক্ষ নম্বর ২।
অবস্থান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পশ্চিম দিক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাইনবোর্ড থেকে ভেতরে প্রবেশ করে প্রথম বিল্ডিংয়ের ডান দিকে সোজা যেতে হবে।
ফোন : ০২-৯৬৬১৯২০, ০১৮১৬৭১৯২২৩। এখানে শিশুকে রাখতে হলে শিশুর মা-বাবা দুজনকেই চাকরিজীবী হতে হবে।
শুক্রবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির দিনে ছায়ানীড় বন্ধ থাকে।

এসওএস চিলড্রেন ভিলেজ
প্রতিষ্ঠানটির দেখভাল ও ব্যয়ভার আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা কর্তৃক বহন করা হয়।
ঠিকানা : ১ শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭।
ফোন : ৮৮-০২-৮১১৮৭৯৩, ০১৭১১৪০২৫৯৫।


অ্যাড্রয়েট ডে কেয়ার সেন্টার
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অ্যাড্রয়েট ডে কেয়ার সেন্টার অন্যতম।
ঠিকানা : বাড়ি-৪৬, রোড-৯/এ, ধানমণ্ডি, ঢাকা।
ফোন : ০২-৮১৫৪৫৮১, ০২-৯১৪৩৯৭৪, ০১৭১১১৬৭২৪৬, ০১৭৩১৫১৫৫১১।
রেড সান ডে কেয়ার সেন্টার
ঠিকানা: আসাদ এভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
ফোন: ০১৯১২২৭০১১৪।
অ্যাঞ্জেল কেয়ার
ব্লক-ই, লালমাটিয়া।
ছানাপোনার বসতবাড়ি
ঠিকানা: মিরপুর সাড়ে এগারো, মিরপুর, ঢাকা।

ইন্টারনেটে ভিক্ষা করে কোটিপতি!


ইন্টারনেটে বোধ হয় সবই সম্ভব! না-হলে এভাবেও ধনী হওয়া যায়? সামান্য একটি বিজ্ঞাপন। ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দিয়ে ভিক্ষা চাওয়া বলা যায়। বিজ্ঞাপনের অকপট বয়ান, ‘আমাকে মিলিয়নেয়র করুন। যে যতটুকু পারেন, সাহায্য করুন।’ এটা ছিল ওই ব্যক্তির অবসরকালীন পরিকল্পনা। ৪০ বছর বয়সে এই প্রচার শুরু করেন। ১৫ বছরেই তিনি মিলিয়নেয়র!
ইন্টারনেটে ক্রাউডফান্ডিং-এর বিজ্ঞাপন দেন। বিশ্ববাসীর কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়ে থাকেন। কেউ চিকিৎ‍সার জন্য, পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য কেউ বা সমাজসেবার জন্য– নানাবিধ কারণে। কিন্তু নিজেকে ধনী করার জন্য ক্রাউডফান্ডিং! হ্যাঁ, ইন্টারনেটে এরকমই বিজ্ঞাপন দিয়ে এক ব্যক্তি ধনকুবের হয়ে গেলেন। তাঁর পরিকল্পনা ছিল, জনগণের কাছে ভিক্ষা চেয়ে ১০ বছরে যতটুকু আয় হয়, সেটাই লাভ। কিন্তু মিলিয়নেয়ার হয়ে যাবেন, স্বপ্নেও ভাবেননি।
একটি সাইটে বিজ্ঞাপন দেন ওই ব্যক্তি। সাইটটি ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি। কোনও প্রতারণা নয়, শুধু লিখেছিলেন, আমাকে মিলিয়নেয়ার করুন। আমি খুব গরিব। এরপর অনেকেই যৎ‍সামান্য দান করতে থাকেন ওই ব্যক্তিকে। দানের পরিমাণ বেড়ে গত ১৫ বছরে ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে।

ঘরে বসেই বিকল কিডনির সুচিকিৎসায় সিএপিডি



কিডনি বিকল রোগীদের সুচিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি অ্যামবুলেটরি পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (সিএপিডি)। যেসব কিডনি ফেইলর রোগী ঘন ঘন হাসপাতালে আসতে চান না, যাদের জন্য হেমোডায়ালাইসিস চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা নেই তারা সিএপিডি পদ্ধতিতে ঘরে বসেই চিকিৎসা নিতে পারেন। শুধু তাই নয়, এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নেয়া কিডনি বিকল রোগীরা দৈনন্দিন কাজকর্মও করতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ও কিডনি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ -এর সভাপতি অধ্যাপক হারুন আর রশিদ বলেন, সিএপিডি পদ্ধতির চিকিৎসায় রোগীর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, ঘন ঘন রক্ত দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না, খাবারের ক্ষেত্রে তেমন বিধি-নিষেধও থাকে না। সিএপিডি হেমোডায়ালাইসিসের বিকল্প কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত তৃতীয় বার্ষিক সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে আরো জানানো হয়, অনুমিত পরিসংখ্যান অনুসারে বাংলাদেশে ২ কোটি লোক কোনো না কোনো ভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ধীরগতিতে কিডনি অকেজো হয় প্রায় ৩৫ হাজার লোকের। দেশের ২৩টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৩টিতে কিডনি রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে আছে ৮৬টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক। সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যয়বহুল।
হেমোডায়ালাইসিস, পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন হলো কিডনি অকেজো রোগের চিকিৎসা। বর্তমানে সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ৯৫টি হেমোডায়ালাইসিস ও ১০টি পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে। ৮টি হাসপাতালে কিডনি সংযোজন করা হয়। চিকিৎসা সুবিধার অপ্রতুলতা ও ব্যয়বহুল হওয়ায় অর্থাভাবে বেশির ভাগ কিডনি রোগীর বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুবরণ করে।
অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশীদ বলেন, কিডনি অকেজো রোগীদের চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় কন্টিনিউয়াস অ্যামবুলেটরি পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (সিএপিডি)। একজন কিডনি অকোজো রোগী হেমোডায়ালাইসিস করে যতদিন বাঁচেন, সিএপিডি করে একই সময় বা তারও বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন। এ পদ্ধতিতে চিকিৎসার বাড়তি সুবিধা হলো- এই চিকিৎসা ঘরে বসেই নেয়া যায় এবং রোগী তার দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেক্সিকো ও হংকং-এ ৮০ ভাগ, যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ ভাগ ডায়ালাইসিস সিএপিডির মাধ্যমে হয়ে থাকে। কানাডা, ইউরোপ, জাপান ও চীন ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই চিকিৎসা ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এখনও সেভাবে প্রতিষ্ঠা পায়নি।
জানা গেছে, কিডনি ফাউন্ডেশন হেমোডায়ালাইসিসের বিকল্প হিসেবে সিএপিডিকে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
দেশের বিশিষ্ট কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম. হারুন আর রশিদ আরো জানান, যেসব কিডনি ফেইলর রোগী ঘন ঘন হাসপাতালে আসতে চান না, যারা ঘরে বসে চিকিৎসা নিতে ইচ্ছুক ও যেসব স্থানে হেমোডায়ালাইসিস চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য সিএপিডির বিকল্প নেই।
তাছাড়াও সিএপিডি রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, ঘন ঘন রক্ত দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না, খাবারের তেমন বাধ্যবাধকতা নেই এবং রোগীরাও বেশ উৎফুল্ল বোধ করেন বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অ্যান্ড কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক এম. মুহিবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনি ফেরদৌস রসিদ।
বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ফিরোজ খান, অধ্যাপক শামীম আহমেদ, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক আইয়ুব আলী চৌধুরী, অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক আছিয়া খানম প্রমুখ।

Sunday, August 16, 2015

কাঠের শোপিস বানিয়ে আয়

কাঠ দিয়ে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন শোপিস। দেশ-বিদেশে এসব শোপিসের রয়েছে দারুণ চাহিদা। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শেখ ফায়সাল ও সানজিদ আসাদ
show pies
কাঠের শোপিস বানাতে হাতে যশ থাকা চাই। অভিজ্ঞ কারো সঙ্গে কাজ করেও শিখতে পারেন। সম্ভব না হলে কারিগর রেখেও শোপিস তৈরি করতে পারেন। নাটোরের সিংড়ার ফরিদুল ইসলামের তৈরি কাঠের হস্তশিল্প দেশের চাহিদা মিটিয়ে ছয়টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। প্রথমে অন্যের প্রতিষ্ঠানে কাজ করলেও এখন তাঁর প্রতিষ্ঠানেই কাজ করছেন পাঁচ-ছয়জন কর্মচারী। ফরিদুল জানান, কাঠ দিয়ে তিনি তৈরি করেন তাজমহল, টেবিল ল্যাম্প, ফুলদানি, কলমদানি, নৌকা, মাছ, পাখি, হাতি, জুয়েলারি বক্স, টেবিলঘড়ি, দেয়ালঘড়ি, গাড়ি, পাউডার কেস, মোমদানিসহ হরেক রকম শোপিস। খুব বেশি বিনিয়োগের দরকার হয় না। অব্যবহৃত একটি ঘর কারখানা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
উপকরণ
ঢাকার মানিকনগরের শোপিস কারিগর আবদুল্লাহ মমিন জানান, কাঠ, ফেলনা কাঠের টুকরা এবং গুল্ম দিয়ে তৈরি করা যায় বিভিন্ন ধরনের শোপিস। নিখুঁতভাবে কাঠ খোদাই করে তৈরি করা হয় এসব বাহারি পণ্য। তাতে প্রয়োজন অনুসারে রং করা হয়। শোপিস আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বার্নিশ করা হয়। বার্নিশে অনেকে এক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করেন। জোড়া দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেন ভালো মানের আইকা।
সতর্কতা
আবদুল্লাহ মমিন জানান, শোপিস যত নিখুঁত হবে, দামও হবে তত বেশি। তাই তৈরির সময় সতর্ক থাকতে হয়। বিশেষ করে কাঠ খোদাই করার সময়। এ ছাড়া একটু অসাবধানতায় ভেঙে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে পণ্যটি।
শোপিসের বাজার
আবদুল্লাহ মমিন জানান, ঢাকার বিভিন্ন সুপার মল, উপহার সামগ্রীর দোকান, হস্তশিল্পের দোকানসহ বিভিন্ন জায়গায় পাইকারি দামে বিক্রি করা হয় শোপিস। এ ছাড়া কারখানা থেকেই হকাররা পাইকারি দামে কিনে নিয়ে শহর ও গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে এসব পণ্য বিক্রি করেন।
বিদেশেও এসব শোপিসের দারুণ চাহিদা আছে। ফরিদুল জানান, তাঁর তৈরি শোপিস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইতালি, জার্মানি, আরব আমিরাত, মরিশাস, দুবাই, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে।
ঢাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের বিসমিল্লাহ কটেজের কর্ণধার হেলাল খান জানান, চাহিদা অনুযায়ী শোপিসের সরবরাহ কম। সব ধরনের ক্রেতাই ঘর সাজাতে বা উপহার দিতে কাঠের শোপিস কিনে নিয়ে যান। তবে ছাত্রছাত্রী ও গৃহিণীরা এসব পণ্য বেশি কিনে থাকেন।
আয়ের হিসাব
ফরিদুল ইসলাম জানান, কারিগরদের দৈনিক হিসাবে মজুরি দিতে হয়। প্রতি পিস পণ্য বিক্রি হয় প্রকারভেদে ২০ থেকে ৫০০ টাকায়। আবদুল্লাহ মমিন শুরু করেছিলেন মাত্র ২৫ হাজার টাকায়। এই টাকা দিয়ে তিনি কিছু পরিত্যক্ত কাঠ, শোপিস তৈরির প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বার্নিশ ও কেমিক্যাল কিনেছিলেন। শুরুতে মাসে আয় হতো ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন ব্যবসা বড় হয়েছে, লোকবলও অনেক। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ১২ জন কর্মচারী। সব খরচ বাদে মাসে আয় থাকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।


কেশবপুরের আলতাপোল গ্রাম

কাঠের শোপিস তৈরি করে শাহানা এখন স্বাবলম্বী





কেশবপুরের আলতাপোল গ্রাম। থানা শহর থেকে স্বল্প দূরত্বের এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় বর্ষা মওসুমে মাঠঘাট পানিতে ডুবে থাকে দীর্ঘ সময়। ফসলও ঠিকমতো হয় না। কাজের অভাবে অলস সময় পার করতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের। তবে অলস বসে থাকলে তো আর সংসারে গতি আসে না। জীবন-জীবিকার তাগিদে ভিন্ন পেশার সাথে জড়িয়ে পড়েন তারা। আর ভিন্ন পেশা হিসেবে কাঠের শোপিস তৈরি করে তা বাজারজাত শুরু করেন। গাছের চিকন ও অল্প মোটা ডাল ও বডি শুকিয়ে তা মেশিনে প্রক্রিয়া করে দৃষ্টিনন্দন শোপিস তৈরি করে থাকেন তারা।
এই গ্রামের এমনই এক গৃহবধূ শাহানা বেগম, যিনি সংসারের অভাব দূর করতে প্রায় ১৫ বছর ধরে কাঠের শোপিস তৈরি করে চলেছেন। স্বামী, এক ছেলে আর দুই মেয়ের সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। আখের চাষ, মাছের ঘের আর গরু পালনের পাশাপাশি সেলাই মেশিনও চালান তিনি। স্বামী আবদুল মালেক ফার্নিচারের রঙমিস্ত্রির কাজ করেন। ফলে আগের মতো এখন অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না তাকে। শাহানা নিজ হাতেই মেশিনে তৈরি করছেন কাঠের নান্দনিক শোপিস। বর্তমানে শাহানা ছাড়াও এই গ্রামের বহু মানুষ কাঠের শোপিস তৈরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। আলতাপোল গ্রামের মানুষ শোপিস তৈরি করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি যশোরের কেশবপুরের আলতাপোল গ্রামে সরেজমিন এসব দেখা যায়। চোখে পড়ে শোপিস তৈরির কর্মযজ্ঞ।
শাহানা বেগম জানান, নিজেদের দুই বিঘা জমি থাকলেও চাষাবাদ ভালো হতো না। ফলে সংসারে অভাব লেগেই ছিল। প্রায় ছয় বছর আগে তিনি ভারতে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। সেখানে শোপিস তৈরির কারখানা দেখে উদ্বুদ্ধ হন। জানতে পারেন কারখানা তৈরি করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু অর্থের অভাবে কারখানা দেয়া হয়নি। তবে মনের ভেতর বাসনা ছিল একদিন তিনি কারখানা দেবেনই। সেই থেকে ২০০৮ সালে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ‘দোয়েল’ দলের সভাপতি নাছিমা বেগমের পরামর্শে ভর্তি হয়ে সঞ্চয় জমাতে থাকেন। এক মাস পর ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আর এক বিঘা জমি বন্ধক দিয়ে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে মা-ছেলে মিলে শোপিস তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। যশোর থেকে মেশিন কিনে আনুষঙ্গিক কাজ শেষের পর কারখানার আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেন ছোট পরিসরে।
পরের বছর সমিতি থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এবং লাভের টাকা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আরো দু’টি মেশিন কেনেন। বর্তমানে তার কারখানায় তিনটি মেশিনে কাজ হয়। ঢাকা আহছানিয়া মিশনে ঋণ আছে ৩০ হাজার টাকা। শাহানা বেগমের শোপিস তৈরির কারখানায় মগ, জগ, গ্লাস, ডাল ঘুঁটনি, খুনতি, হামানদিস্তা, অ্যাশট্রে, পাউডার কেস, মসলাদানি, চুরির আলনা, চামচ, ডিম সেট, ডাব সেট, আপেল সেট, টাকা রাখার ব্যাংক, পাতিল, হারিকেন, খেলনা সেট, বেলুন-পিঁড়ি, ভিআইপি খুনতি টিফিন বক্স, হাঁড়ি, কড়াই ইত্যাদি তৈরি করা হয় তার মেশিনে। সব মিলিয়ে প্রায় দুই থেকে তিন শ’ আইটেম তৈরি করা যায় বলে জানান শাহানা বেগম তার মেশিন দিয়ে। 
তিনি জানান, বিভিন্ন শোপিস তৈরিতে আম, জাম, কাঁঠাল, সেগুন, মেহগনি প্রভৃতি কাঠের প্রয়োজন হয়। এসব কাঠের দামও তুলনামূলক কম। স্থানীয় ২৩ মাইল এলাকা থেকে কাঠ কিনে তা শুকিয়ে কারখানায় বিভিন্ন ধরন ও আকারের শোপিস তৈরি করা হয় মুহূর্তের মধ্যেই। শোপিসগুলো আকারভেদে ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে যশোর, সাতীরা, খুলনা, মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়। শোপিস তৈরিপ্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিত্যক্ত কাঠ বের হয়, যা পরে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এই ব্যবসায় করেই শাহানা বেগমের পুঁজি এখন এক লাখ টাকা। বাড়ি তৈরির জন্য কিনেছেন ১৫ কাঠা জমি ও গরু।
শাহানা কারখানায় স্থানীয় লতিফের স্ত্রীও শোপিস তৈরির কাজ করেন। তিনি বলেন, অবসরে অলস সময় কাটাই সেই সময়টুকু কাজ করে কিছু অর্থ পাই, মন্দ কী? শাহানা বেগমের কারখানায় অনেক নারী কাজ করেন। জানা যায়, ২০ জনের বেশি নারী তার কারখানায় কাজ করেন। একটি শোপিস তৈরি করতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। প্রতিটি শোপিসের জন্য ২-১০ টাকা দেয়া হয়। একজন নারী গড়ে প্রতি মাসে এক থেকে দুই হাজার টাকা পান।
কাজের সার্বিক বিষয়ে শাহানা বলেন, আমি যে পেশায় নিয়োজিত তা খুবই ভালো লাগছে। স্বল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় শুরু করলেও বর্তমানে ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে চাই। এ জন্য আরো আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমানে সব খরচ বাদে মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়। এখন নিজের পাকা বাড়ি ও মালামাল পরিবহনে নিজস্ব গাড়ির স্বপ্ন দেখছেন তিনি। কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং আর্থিক স্বল্প পুঁজি বড় বাধা বলে তিনি মনে করছেন। এ ক্ষেত্রে বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কেশবপুর শাখার ম্যানেজার মো: মফিজুল ইসলাম জানান, শাহানা বেগম আমাদের পুরনো সদস্য। তিনি নিয়মিত সঞ্চয় জমা করেন এবং ঋণ আদান-প্রদান করে থাকেন। তিনি খুবই পরিশ্রমী। তার শোপিস তৈরির কারখানা দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি স্থানীয়ভাবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। পরিবারে আর্থসামাজিক অবস্থারও পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে শোপিস তৈরি করে সংসারের অভাব দূর করতে সক্ষম হয়েছেন।


পণ্য :

কাঠের শোপিস তৈরী

সম্ভাব্য পুঁজি:৫০০০০০ টাকা থেকে ৭০০০০০ টাকা পর্যন্ত
সম্ভাব্য লাভ:
মাসে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
প্রস্তুত প্রণালি:
বেঁচে যাওয়া  কাঠ কেটে নতুন সেপ দিয়ে তার উপর নকশা করে পণ্য তৈরি করা হয় । পন্যের উপর বার্নিশ বা সাইনার দিয়ে বিক্রির জন্য দোকানে আনা হয়।
বাজারজাতকরণ:
মার্কেটে দোকান নিয়ে এই ব্যবসা করা যায় ।
যোগ্যতা:
বিশেষ কোন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই । সৃজনশীল হলে এ ব্যবসায় ভালো করা সম্ভব।



 কাঠের কারুকাজ করা ছোটখাটো জিনিসপত্র কোথায় কিনতে পাবো?


* ঢাকা কলেজের পাশে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের নিচ তলায় “ফাতেমা কটেজ” নামের দোকানটিতে কাঠের কারুকাজ করা বিভিন্ন জিনিস, যেমন- গয়নার বাক্স, চুড়ির বাক্স, ট্রে, টেবিল ল্যাম্প, কলমদানি, আয়না, ঘড়ি, ওয়াল শোপিস, সিন্দুক ইত্যাদি কিনতে পাবেন।



দোয়েল চত্বরে পাবেন বেশ কিছু।

গুলশান-২ এর dcc মার্কেটে প্রচুর পাবেন/ আর কিছু পাবেন আড়ং এ/ নিউ মার্কেটেও পাবেন


কারুকাঠের জিনিস


কাঠের কারুকাজ করা জিনিসপত্রে সাজানো ফাতেমা কটেজ অ্যান্ড ঝিনুকমালা কঙ্বাজার শোরুমটি। মিয়ানমারসহ সারা দেশ থেকে কুটির শিল্পের নানা পণ্যসহ কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবের সংগ্রহ আছে এখানে। এখানে পাবেন কাঠের তৈরি কোরআন শরিফ বঙ্, টি-টেবিল, টি-ট্রলি, শোপিস রাখার কর্নার র‌্যাক, বেডসাইড টেবিল, সিন্দুক, গয়নার বাঙ্, চুড়ির আলনা, ওয়াল শোপিস, আয়না, রেহাল ও কাঠের ফলের ঝুড়ি, কাঠের টিস্যু বঙ্, কাঠের ট্রে, টেবিল ল্যাম্প, ঘড়ি, কলমদানি ও শোপিস। এ ছাড়া আছে পিতলের হুক্কা, মেটালের গয়না, মেটাল শোপিস, শিংয়ের শোপিস, একতারা ইত্যাদি।
১৯৮৮ সালে ঢাকার নিউ সুপার মার্কেটে যাত্রা শুরু করে শোরুমটি। এরপর ২০০০ সালে এটি চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে স্থান পাল্টায়। দোকানের মালিক মো. আজিজ জানান, বিভিন্ন ধরনের উপহার কেনার জন্য এখানে অনেকে আসেন। মূলত শৌখিন মানুষরাই তাঁদের প্রধান ক্রেতা।
দরদাম
গয়নার বাঙ্ আকার ও ডিজাইন অনুযায়ী ৮০ থেকে ১২০০ টাকা, চুড়ির বাঙ্ ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, কোরআন শরিফ বঙ্ ৯০০ টাকা, কাঠের ট্রে ২৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কলমদানি ১২০ টাকা, ঘড়ি ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা, আয়না ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, রেহাল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ফলের ঝুড়ি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টিস্যু বঙ্ ৪৫০ টাকা, টেবিল ল্যাম্প ৫৫০ টাকা, টি-টেবিল ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, বেডসাইড টেবিল ১১ থেকে ১৫ হাজার টাকা, টি-ট্রলি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, কাঠের সিন্দুক ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, কর্নার শোপিস র‌্যাক ৪০০০ থেকে ৫৫০০ টাকা, ওয়াল শোপিস ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা, চুড়ির আলনা ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, কাঠের শোপিস ৪০০ থেকে ২০০০ টাকা, পিতলের হুক্কা ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, মেটালের গয়না ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মেটাল শোপিস ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, শিংয়ের শোপিস ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, একতারা ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঠের চামচ ও খুন্তি ৩০ থেকে ৫০ টাকা।


কাঠের কুটির শিল্পে স্বাবলম্বী কেশবপুরে ৪ গ্রামের মানুষ


কাঠের কুটির শিল্পে ভাগ্য বদলেছেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার ৪ গ্রামের মানুষ। কাক-ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অবধি এসব গ্রামরে সব বয়সের মানুষের ব্যস্ত সময় কাটে মোমদানি, ফুলদানি, চুড়ির আলনা, কলস, বাটিসহ বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী তৈরিতে। আর এ কাজের মাধ্যমে নিত্য আয়ের ৬ শতাধিক পরিবার এখন স্বাবলম্বী। 

নব্বই এর দশকের শুরুর দিকে কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের এক ব্যক্তি ভারত থেকে শিখে এসে কুটির শিল্পের কাজ শুরু করেন। অল্পদিনেই সফল হন তিনি। তার দেখাদেখি আলতাপোল, কন্দর্পপুর, বড়েঙ্গা ও মঙ্গলকোটসহ আশপাশের গ্রামগুলোর অনেকেই সময়ের ব্যবধানে জড়িয়ে পড়েন এ শিল্পের সাথে। অধিক লাভবান হওয়ায় দিনে দিনে বাড়ছে এর ব্যাপকতা।

এসব কারখানায় ছোট-ছোট কাঠের টুকরা দিয়ে তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের মোমদানি, ফুলদানি, কলস, বাটি, পাউডার কেস, বয়াম, ডিম সেট, খুনতি, হামাম, পিঁড়ি, মেয়েদের চুড়ি রাখার আলনাসহ বিভিন্ন সামগ্রী। 

বছর দশেক আগেও অন্যের জমিতে কামলা খাটা মানুষগুলো কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করে আজ স্বাবলম্বী বলে জানালেন অজিয়ার রহমান নামের একজন কারখানার মালিক।

এখানে উৎপাদিত পণ্য সারা দেশে সমাদৃত হওয়ায় এর সাথে জড়িতদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানালেন কেশবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ রায়হান কবীর।

কেশবপুরের ৪ গ্রামে অন্তত ৪শ' কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মালিক-শ্রমিক, কাঠ ব্যবসায়ীসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কমপক্ষে ২০ হাজার লোক জীবিকা নির্বাহ করছেন।


ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে শোপিস


তানজিনা ইভা : সারাদিন মানুষ কাজ-কর্ম শেষ করে ফিরে আসে তার ভালোবাসার নীড়ে। আর সেই স্থানটি যদি থাকে মনের মতো করে সাজানো, তাহলে তো কথায় নেই। আর এই ঘর সাজানোর জন্য শোপিস হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।

নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত সব পরিবারেই কম বেশি ফার্নিচার থাকে। সেগুলো হতে পারে কাঠ, বাঁশ, বেত অথবা লোহার। রুচিশীল মানুষ তার ঘরটি সাজায় মনের মতো শো-পিস দিয়ে। যারা তাদের ঘরটি সাজাতে চান মনের মতো করে, কিন্তু ভেবে পাচ্ছেন না কোথায় কোন জিনিসটা রাখবেন তাদের জন্যই এ আয়োজন ।
এক সময় মানুষের ভাবনা ছিল শো-পিস শুধু শোকেজেই মানায়। তাই তারা শখের ছোট ছোট শো-পিচগুলো সাজিয়ে রাখেন শুধুমাত্র শোকেজেই। কিন্তু এখন সেই ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তন এসেছে মানুষের রুচিরও। এ জন্য শুধু শোকেজ নয়, এখন তা ঘরের সব জায়গাতেই সাজিয়ে রাখা যায়।
আপনার বাসায় কেউ এলে প্রথম যে জায়গাটিতে বসবেন তা হচ্ছে ড্রয়িং রুম । আর তাই এই রুমটিকে সাজাতে ব্যবহার করতে পারেন মাঝারি কিংবা একটু বড় ধরনের শো-পিস। সেখানে সোফা কিংবা অন্যান্য ফার্নিচার যদি কাঠের হয়, তবে কাঠের শো-পিসই সেখানে মানাবে ভালো। আর যদি ফার্নিচারগুলো বেতের হয় তবে সেখানে বাঁশ অথবা বেতের যে কোনো ধরনের শো-পিস রাখা যেতে পারে। তবে এখানে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে ঘরের আকার কেমন। যদি ঘরটি বড় হয় সেখানে একটু বড় ধরনের শো-পিস আর যদি ছোট হয় তবে একটু ছোট শো-পিস রাখলে মানাবে ভালো । কিছু সাধারণ, কিছু মডার্ন, ভিক্টোরিয়ান কারুকাজ বেশি অথবা রোমান্স স্টাইলের শো-পিচ ড্রয়িং রুমে রাখা যেতে পারে । মূর্তি, কাঠের পাটাতন বিশিষ্ট শো-পিস, বাঁশ অথবা বেতের শো-পিসগুলো এখানে রাখলে মন্দ লাগবে না ।

ডাইনিং রুমে খুব বেশি শো-পিস না রাখাটাই ভালো । তবে বেসিনের পাশে ফুল কিংবা সাবান রাখার কেজটাও হতে পারে কোনো শো-পিস।
সাধারণত বেড রুমগুলোতে থাকে কাঠের, ষ্টিল অথবা বেতের তৈরি খাট। আবার কেউ কেউ পছন্দ করেন ফ্লোরিং করতে। এ জন্য যেখানে যে ধরনের ফর্নিচার ব্যবহার করা হয় সেখানে সেই ধরনের শো-পিস রাখাটায় ভালো। ড্রেসিং টেবিলে থাকতে পারে জুয়েলারি বক্স, লিপিষ্টিক হোল্ডার অথবা চিরুনী রাখার বক্স।
বাচ্চাদের রুমে শো-পিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত তা হচ্ছে বাচ্চাটি ছেলে না মেয়ে। ছেলে হলে স্পাইডার ম্যান, আবার মেয়ে হলে বার্বিকিউ জাতীয় কার্টুনের শো-পিস দেওয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের শো-পিসের ক্ষেত্রে লেদার এবং কাঠের তৈরি শোপিসই ভাল মানায়। কারণ এগুলো  সহজে ভেঙ্গে বা ছিঁড়ে যাবে না।
উপহার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে শো-পিস। সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই। এমন অনেক শো-পিস রয়েছে যেগুলো দেখলেই কিনতে ইচ্ছে করে। তাই বিয়ে কিংবা জন্মদিনসহ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের উপহার হিসেবে শো-পিস দেওয়া যেতে পারে। আবার ধরুন যে কোনো ধরনের অকেশন-যেমন বন্ধু দিবস, ভালোবাসা দিবস, মা দিবসে উপহার দেওয়া যেতে পারে শো-পিস। বাবা-মা, কিংবা দাদা-দাদিকে এমন কিছু  শো-পিস দেওয়া যেতে পারে যেগুলো পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
দামি শোপিস কিনতে চাইলে অটবি, হাতিল, ফিদার টাচ, আয়ডিয়াস, যাত্রা কিংবা সোর্স-এ যাওয়া যেতে পারে । আবার নিউমার্কেট এবং আজিজ সুপার মার্কেটেও সব ধরনের শোপিস পাওয়া যায়।


ফরিদুলের শোপিস ছয় দেশে


নাটোরের ফরিদুল গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর বাজারে গড়ে তুলেছেন নিজের শোপিস দুনিয়া। তার হাতে তৈরি কাঠের শোপিস এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে ছয়টি দেশে রফতানি হচ্ছে।
ফরিদুল তার প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন আর নাছির ক্র্যাফট। এখানে কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে তাজমহল, হারিকেন, চার্জার হারিকেন, টেবিল ল্যাম্প, ফুলদানি, কলমদানি, জুয়েলারি বঙ্, টেবিল ঘড়ি, দেয়াল ঘড়ি, পাউডার কেস, মোমদানি, সিঁদুরদানি ও রিং কেইসসহ হরেক রকম সব পণ্য। নিখুঁত হাতে কাঠ খোদাই করে তৈরি এসব শোপিস অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাঁচ বছর ধরে শোপিস তৈরি করে চলেছেন ফরিদুল। পুঁজি সঙ্কটের মধ্যেও তিনি থেমে যাননি।
তার পুরো নাম ফরিদুল ইসলাম। সিংড়া উপজেলার সোনাপুর গ্রামে তার বাড়ি। প্রাইমারি শিক্ষা শেষ করার পর অভাব-অনটনের কারণে আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি তার। অভাবের কারণে একদিন ফরিদুল চলে যান খুলনায়। সেখানকার এক স্থানীয় শিল্পকারখানায় তিন থেকে চার মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে চলে যান চট্টগ্রামে। সেখানে প্রায় দুই বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে আসেন খুলনায়।খুলনা নগরীর গগন বাবু রোডের ‘সৃজনী কারুকর্মে’ সাড়ে ৪ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। পরে ২০০৪ সালে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর বাজারে ঘরভাড়া নিয়ে নিজেই গড়ে তোলেন কারখানা। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে শোপিস তৈরি করার অবস্থা তার ছিল না। ফরিদুলের আগ্রহ আর শৈল্পিক নির্মাণশৈলী দেখে আগ্রহী হন গ্রাম্য চিকিৎসক আবদুর রহিম। তিনি ফরিদুলকে ৩০ হাজার টাকা ধার দিয়ে সহযোগিতা করেন। এরপর আর ফরিদুলকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। খবর রাইজিংবিডি
এখন তার কারখানায় ৫ জন দক্ষ কারিগর রয়েছে। আর এরা সবাই খুলনা থেকে এসেছেন। সবাই কমিশন ভিত্তিতে পণ্য তৈরি করেন।তৈরির উপকরণ : এসব শোপিস তৈরির প্রধান উপকরণ মেহগনি ও খেইয়া বাবলা (স্থানীয়ভাবে জিলাপির গাছ হিসেবে পরিচিত)। আর এসব গাছের কাঠ কেটে ও ঘষে মসৃণ করার পরই তৈরি হয় এ পণ্য।
বিক্রির বাজার : ফরিদুলের তৈরি পণ্য ঢাকার চন্দ্রিমা কটেজ, বিভিন্ন সুপারমল, মিরপুর রোডের আইডিয়াল কার্ড, রাজশাহী নিউ মার্কেটের কুঠিঘর, উত্তরাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্র রংপুরের ভিন্নজগৎ, দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী, নওগাঁর পাহাড়পুরসহ বিভিন্ন জায়গায় পাইকারি দামে বিক্রি করা হয়।
এছাড়া কারখানা থেকেই হকাররা পাইকারি দামে কিনে নিয়ে গ্রামগঞ্জে কিংবা হাটে-বাজারে এবং গ্রামের বিভিন্ন সমাবেশ, ইসলামী জলসা, স্কুল-কলেজের উৎসবসহ নানা অনুষ্ঠানে বিক্রি করে থাকে।
বিদেশের চাহিদা : ঢাকার টোরাস লিমিটেডের মাধ্যমে ফরিদুল এখন ইতালি, জ্যামাইকা, জার্মানি, আরব আমিরাত, মরিশাস, দুবাই, আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রে হাতের আংটি, স্যুপের বাটি, চুড়ি, হাতের বালা, মোমদানি, তাজমহল, চার্জার হারিকেন, ডিশ আয়না, টেবিল আয়না, ডিজিটাল আয়না, পকেট আয়না ও রিংসহ হরেক রকম পণ্য পাঠান।

পাইকারি বিক্রেতা ঢাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের বিসমিল্লাহ কটেজের স্বত্বাধিকারী হেলাল খান বলেন, ‘ফরিদুলের শোপিস দেশের অন্যান্য কারখানার চেয়ে অনেক ভালো ও নিখুঁত। দামেও অপেক্ষাকৃত কম। ছাত্রছাত্রী ও বাসাবাড়ির লোকজন এগুলো বেশি কিনে থাকেন।’ উত্তরা ১/২-৯৯ সুপার মলের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, ফরিদুলের পণ্যের ফিনিশিং অনেক ভালো।
রাজশাহী নিউমার্কেটের কুঠিঘরের মালিক নাগরকুমার ঘোষ জানান, পণ্যের মান অনেক সহনীয় পর্যায়ে থাকায় ক্রেতারা কেনেন ভালো। অবস্থা এমন হয় যে, অনেক সময় সরবরাহ করে কুলিয়ে ওঠা যায় না।

ফেরিওয়ালা মাহবুব হোসেন ও সাইফুল ইসলাম জানান, কমদাম এবং নিখুঁত কারুকাজ হওয়ায় বিক্রি ভালো হয়। কিন্তু কারখানায় গিয়েও চাহিদামতো পণ্য ও সরবরাহ পাওয়া যায় না। ঢাকার টোরাস লিমিটেডের মালিক মাকসুদ খান বলেন, ‘দেশের অনেক কারখানার তৈরি শোপিস বিদেশে পাঠিয়ে থাকি। ফরিদুলের কারখানার স্যুপের বাটি, ডিজিটাল হারিকেন, তাজমহল, মোমদানি ও মেয়েদের ফ্যাশনের জন্য হাতের চুড়ি ও বালার চাহিদা বেশ। ফরিদুল বলেন, ‘এখন মাসে ২ লাখ টাকার পণ্য তৈরি করে থাকি।

Saturday, August 15, 2015

ফ্রি হোম ডেলিভারি বিজনেস কীভাবে শুরু করা যায়?

প্রশ্নঃ ফ্রি হোম ডেলিভারি বিজনেস কীভাবে শুরু করা যায়? আমি আমার এলাকায় ফ্রি হোম ডেলিভারি শুরু করতে চাই । যেমন চাল , ডাল ইত্যাদি বা পচনশীল কোন দ্রব্য মাছ, মাংস, শাক সবজি বাদ দিয়ে যা আছে সব। এটি কীভাবে শুরু করবো, জানাবেন প্লিজ?


উত্তরঃ প্রথমত আপনার সৃজনশীল ক্যারিয়ার চিন্তার জন্য অভিনন্দন। এটি খুবই ভালো একটি ক্যারিয়ার চিন্তা যা আপনাকে কিছুদিনের মাঝেই একজন সফল ব্যক্তিতে পরিণত করে দিতে পারে যদি আপনি এর পেছনে কঠোর শ্রম দেন। ফ্রি হোম ডেলিভারি বিজনেস বাংলাদেশে খুব একটা প্রচলিত নেই। যেকোনো সময়ে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন। তবে এর আগে আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

যা যা করবেন :

১. ফ্রি হোম ডেলিভারি বিজনেস শুরু করার আগে আপনাকে একটি লাইসেন্স করে নিতে হবে।
২. সরকারিভাবে অনুমোদন নেয়ার চেষ্টা করুন।
৩. পণ্য ডেলিভারি দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গাড়ির ব্যবস্থা করুন।
৪. পণ্যের কিছু সেক্টর বাছাই করুন যেগুলো থেকে আপনি বেশি লাভ করতে পারবেন। যেমন ফার্মাসি, মুদি, ব্যাংক, রেস্টুরেন্ট, ফুলের দোকান, হাসপাতাল, অফিস অথবা গিফট শপ ইত্যাদি জায়গাগুলোতে আপনার পরিচিতি বাড়ান।
৫. আপনার অফিসের স্থান নির্বাচন, অফিসের একটি নাম দিন এবং এর প্রয়োজনীয় বিজনেস কার্ড, ওয়েবসাইট ইত্যাদি তৈরি করুন। সরবরাহকৃত গাড়িতে আপনার অফিসের যোগাযোগের ঠিকানা লিখে দিন। তাছাড়া অফিসে সবসময় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে কিছু এমপ্লয়ি নিয়োগ দিন।
অফিসিয়াল এসব কার্যক্রম ঠিক করে আপনি খুব সহজেই ফ্রি হোম ডেলিভারি বিজনেস শুরু করে দিতে পারেন।

ফ্রী হোম ডেলিভারি / ডেলিভারি পাওয়ার শর্ত ও নিওমাবলী


1. Send us your name ,full address and two mobile number.
১। আপনার নাম, পুর্ণ ঠিকানা ও দুটি মোবাইল নাম্বার দিন।
2.In the case of free home delivery- You will get your parcel within 48 working hours .
২। ফ্রি হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রে  ৪৮ কার্য ঘণ্টার মধ্যে আপনি আপনার পারসেল পাবেন ।
3. During the time of delivery if found your mobile is switch off or not receiving the call, then it will mark as re delivery and you should pay 60 tk as re-delivery fee when next time you receive your product.
৩। ডেলিভারি দেওয়ার সময় আপনার মোবাইল বন্ধ পেলে বা কল রিসিভ না করলে ডেলিভারি টি রি-ডেলিভারির আওতায় পরবে এবং পরেরবার ডেলিভারির সময় আপনাকে রি-ডেলিভারি ফি বাবদ ৬০ টাকা দিতে হবে।
4.  In the case of Cash on delivery, if you want to returned/exchange the product you should pay 120tk and returned accept only that time when our delivery man arrives to you to give delivery, Further exchange or returning will not acceptable. The Real Item's Color maybe vary from the listing picture because of different Camera lens, and different light environment. So, we will not accept return policy in this reasons.
৪। ক্যাশ অন ডেলিভারির সময় পন্য ফেরত দিতে চাইলে ১২০ টাকা দিতে হবে এবং একি ডেলিভারি ম্যান এর কাছে ফেরত দিতে হবে।। কখন কখন পণ্যের ছবির সাথে বাস্তবের রঙ বা আকার এর ভিন্নতা থাকতে পারে, তাই এইসব কারন বশত পণ্য পরিবর্তন বা ফেরত নেওয়া হবে না, 
5. Our delivery time is 10am - 10pm. Just tell us office address or home address. Then delivery procedure will be done in official time. But we don't except any fixed time. Because we have many delivery to deliver. So we can not fix the time. But If any emergency then time can be fix. In that case you should pay 100 tk Extra.
৫। আমাদের ডেলিভারির সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা। অর্ডার দেয়ার সময় অফিস না বাসা উল্লেখ করে দিবেন। তাহলে অফিস এর সময় ডেলিভারি দেয়া হবে। এছারা কোন নির্ধারিত সময় গ্রহনযোগ্য হবেনা। আমাদের অনেক ডেলিভারি দিতে হয় , তাই নির্ধারিত সময় নেয়া সম্ভব নয়। যদি জরুরি ভিত্তিতে নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি লাগে তাহলে ১০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে।
6. In the case of urgent (within 24hours) delivery you should pay 80 tk Extra.
৬। একিদিনের ডেলিভারি চাইলে ৮০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে।
7. If you are giving other address without home or office , you should give time at least as like office address. Otherwise you should pay the fee as like fixing time fee.
৭। বাসা বা অফিস এর ঠিকানা ব্যতিত অন্য কোন ঠিকানা দিলে , অন্তত অফিসিয়াল সময় পর্যন্ত সময় দিতে হবে অন্যথায় নির্ধারিত সময়ের ফি দিতে হবে।
8. Without this, if any delivery man want other extra charges, or misbehave with you, as soon as possible just inform us. As  they are delivery men of courier company,  not our personal delivery men, we don't know that who will goes to deliver your product. So just give us the number of delivery man.
৯। উপোরক্ত কারণ ছাড়া কোণ ডেলিভারি মেন যদি অতিরিক্ত টাকা চায় , অথবা খারাপ ব্যবহার করে, তখনি আমাদের জানাবেন। যেহেতু তারা কুরিয়ার কোম্পানির লোক আমাদের ব্যক্তিগত ডেলিভারি মেন নয়, তাই আমরা জানবনা কোন ডেলিভারি মেনটি আপনার কাছে যাবে। আমাদেরকে তার মোবাইল নাম্বার সহ অবিহিত করুন।
10. For out side Dhaka city We have two ways: i. If you want free home delivery then you have to pay full amount through bkash/bank first. Then we will courier it through Shundorban courier Serveice. ii. If you want cash on delivery then we will send it through S.A poribohon in Condition and you have to pay 100 tk extra. You have to pick it from S.A poribohon Counter. (*** After confirmation of your order cancellation will not acceptable)
১০। ঢাকা শহরের বাহিরে পার্সেল এর জন্নে আমাদের দুটি পদ্ধতি রয়েছে- i. আপনি যদি ফ্রী হোম ডেলিভারি চান সেই ক্ষেত্রে আপনাকে পণ্যের সম্পূর্ণ মুল্ল্য প্রথমে পরিশোধ করতে হবে বিকাশ/ব্যাংক এর মাধ্যমে। অতঃপর আমার সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে কুরিয়ার করে দিব। ii. আর আপনি যদি ক্যাশ অন ডেলিভারি ছান সেই ক্ষেত্রে আমরা এস এ পরিবহন এ পার্সেল পাঠাব , এর জন্নে আপনাকে ১০০ টাকা অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। এবং আপনাকে এস এ পরিবহনের কাউন্টার থেকে পণ্যটি বুঝে নিতে হবে। (*** অর্ডার  কনফার্মেশনের পর আর কোন কান্সেলেশন গ্রহণযোগ্য হবে না)।