Friday, December 21, 2012

 নানা রকম সমুদ্র সৈকত

 বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে রয়েছে প্রকৃতির বিচিত্রতা। প্রাকৃতিক বিচিত্র খেয়ালের এমনই একটি সমুদ্র সৈকত। এসবেরও আবার রয়েছে কিছু অদ্ভুত অনুষঙ্গ। সমুদ্র সৈকতের এমন অদ্ভুত প্রকৃতি নিয়ে লিখেছেন মোস্তাক চৌধুরী
লাল সৈকত
চীনের পানজিন শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে লাইয়াহু নদীতে এই লাল সৈকতের অবস্থান। একধরনের সামুদ্রিক আগাছা যা লোনা এবং ক্ষারকীয় মাটিতে জšে§ এবং দেখতে লাল আর এ জন্যই এই সৈকতকে লাল সৈকত বলা হয়ে থাকে। এপ্রিল-মে মাসে এই আগাছা জন্মাতে শুরু করে এবং গ্রীষ্মে তা সবুজ বর্ণ ধারণ করে। আর শরতে এই আগাছা টক টকে লাল বর্ণ ধারণ করে যা সৈকতকে লাল গালিচায় পরিণত করে। এই লাল সৈকতের সব জায়গায় জনগণের প্রবেশাধিকার নেই শুধু নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় জনসাধারণ প্রবেশ করতে পারে।
কাচের সৈকত
ক্যালিফোর্নিয়ার ফোর্ট বার্গ শহরের কাছে একটি আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত যা রঙিন কাচ দিয়ে খচিত। এই শতাব্দীর প্রথম দিকে এখানে একটি শহরের ধ্বংসস্তূপ ডাম্প করা হয়েছিল, তারপর ১৯৬৭ সালে কর্তৃপক্ষ সর্বসাধারণের এখানে প্রবেশাধিকার এবং পরিচ্ছন্ন করার কাজ বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্রই এখানকার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করে। এখন এখানে নেই কোনো ধ্বংসাবশেষ আছে তীরজুড়ে স্বচ্ছ ঢেউ যা একধরনের চমৎকার স্বচ্ছ পাথর দ্বারা আবৃত।
কৃত্রিম সৈকত
সারা পৃথিবীতে দিনকে দিন কৃত্রিম সৈকতের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। মোনাকো, হংকং, প্যারিস, বার্লিন, রটারড্যাম, টরেন্টোসহ পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় এই কৃত্রিম সৈকত দেখা যায় তবে জাপানের মিয়াজাকির সিয়াগাইয়া ওশান ডোম পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় কৃত্রিম সৈকত। শেরাটন সিয়াগাইয়া রিসোর্টের একটি অংশ এই ওশান ডোম যা ৩০০ মিটার লম্বা এবং ১০০ মিটার প্রস্থ। যাতে আছে কৃত্রিম অগ্ন্যুৎপাতসহ আগ্নেয়গিরি, কৃত্রিম বালি, কৃত্রিম পাম গাছ এবং আরো আছে বিশ্বের বৃহত্তম সঙ্কোচনীয় ছাদ, যা একটি স্থায়ীভাবে নীল আকাশ প্রদান করে থাকে এমনকি বাদলা দিনেও। এখানকার বাতাসের তাপমাত্রা সব সময় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পানির তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  কৃত্রিম আগ্নেয়গিরি ১৫ মিনিট পর সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং প্রতিঘণ্টায় আগ্নেয়গিরি মুখ থেকে আগুনের হল্কা বের হয় এবং একধরনের তরঙ্গের সৃষ্টি করে যা সৈকতে এক অভাবনীয় দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। ১৯৯৩ সালে এই সৈকতটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এবং একসঙ্গে ১০ হাজার পর্যটক এখানে বেড়াতে পারে। 

নস্ট্রাডামাসের ভবিষ্যদ্বাণী

বহুকাল আগে নস্ট্রাডামাস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ২০১২ সালে এক প্রলয়ঙ্করী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর অস্তিত্বের অবসান ঘটবে। কেউ কেউ এ সতর্কবাণীকে নিয়েছেন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে, কেউ আবার এটিকে আমলেই নেননি। নস্ট্রাডামাসের এমন আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে এ পৃথিবী যদি ২০১২ সালে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বেঁচেও যায়, তবু একেবারে নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকার কোনো উপায় নেই। কেননা এবার আর অলৌকিক ক্ষমতায় অনিশ্চিত কোনো ভবিষ্যদ্বাণী নয়, একেবারে অঙ্ক কষে খোদ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে পৃথিবী সম্মুখীন হবে প্রকৃতির এক ভয়ংকর রোষের। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, ২০১৩ সালে সৌরজগতের প্রাণ সূর্য এর নিজস্ব চক্রাবর্তের একটি বিশেষ মুহূর্তে প্রবেশ করবে। এ সময় সূর্যবক্ষে সঞ্চিত শক্তির বিশাল বিস্ফোরণ ঘটবে। এ বিস্ফোরণের আকার এতই ব্যাপক হবে যে, এটি গোটা সৌরজগৎ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। ওই বিস্ফোরণ থেকে নিঃসৃত চৌম্বকশক্তি পৃথিবীর যাবতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটাবে। এতে তাপ ও বিদ্যুৎসহ পৃথিবীর যাবতীয় শক্তি বিতরণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে। সব ধরনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, ইন্টারনেট ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল হয়ে যাবে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নিজের চক্রাবর্তে সূর্যের এ ধরনের অবস্থান সাধারণত প্রতি একশ’ বছরে একবার করে হয়ে থাকে। এর আগে অবশ্য ১৮৫৯ ও ১৯৮৯ সালেও এ ধরনের ঘটনা ছোট পরিসরে ঘটে গেছে। তবে এবার ক্ষতির ব্যাপকতা হবে অনেক বেশি। বর্তমান বিশ্ব আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রযুক্তি ও যন্ত্রনির্ভর হয়ে ওঠায় এর প্রভাবও হবে অচিন্তনীয়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়াম ফক্স ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্যে গত সোমবার লন্ডনে এক জরুরি বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে তিনি বিশ্ববাসীর মনোযোগ ও সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।